বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “শিবির সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আবরারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে এজন্য তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হলো।”
বিচারক আরো বলেন, “সাক্ষীদের সাক্ষ্য, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, আলামতসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবির বলে গুজব ছড়িয়ে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে হত্যা করে। তার শরীরে ৪০-৫০টি জখম ছিল, যা বিচার্য বিষয় ছিল। এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।”
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৬ ঘণ্টা নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর হলের দোতলা ও নিচতলার মাঝামাঝি সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয় আবরারের লাশ। সিসিটিভির ফুটেজে ঘটনাটির বিভিন্ন দৃশ্য ধরা পড়ে। সেই ফুটেজ থেকেই আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
এই মামলায় আবরারের বাবাসহ ৪৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৮ জন। রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, ২৫ আসামির অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছে তারা।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল, আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুস সোবহান তরফদার, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহাবুব আহমেদ, আমিনুল গণী, গাজী জিল্লুর রহমান, আজিজুর রহমান ও ফারুক আহমেদ।