• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

সুন্দর কিন্তু গভীর অভিঘাত তৈরি করা গল্প কম


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম
সুন্দর কিন্তু গভীর অভিঘাত তৈরি করা গল্প কম

আপনার এবারের প্রকাশিত বই দিয়ে শুরু করি। বইয়ের নাম ‘মেলোডি তোমার নাম’। এ বইটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

হাসান মাহবুব : এটি একটি গল্পগ্রন্থ। প্রতিটি গল্পই নর-নারীর ভালোবাসা নিয়ে। হ্যাঁ, শুধুই নর আর নারীর মধ্যে ভালোবাসা, মা-মাটি-দেশ-ঈশ্বর-মহাবিশ্ব জাতীয় বৃহত্তর কোনো অর্থ প্রকাশ করার সুযোগ নেই এখানে।

আপনি দীর্ঘদিন ধরে গল্প লিখছেন। আপনার একাধিক গল্পের বইও বের হয়েছে। সেই জায়গা থেকে জানতে চাই, গল্পে আপনি আপনার সময়কে কীভাবে ধারণ করছেন?

হাসান মাহবুব : গল্পে আমি এবং আমার সময় ভীষণভাবেই প্রকাশিত। তবে সময়কে ধরার উদ্দেশ্য নিয়ে আমি গল্প লিখি না। আমার সময়, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী গল্পে প্রকাশিত হয়ে যায়। তবে বর্তমান সময়ের চেয়েও বড় কিছু আছে। আমি বরং এই সীমার বাইরেই যেতে চাইব।

বাংলাদেশের গল্পের সাম্প্রতিক প্রবণতা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

হাসান মাহবুব : যাদের লেখা পড়ি, সবাই একটু বেশিই এক্সপেরিমেন্টাল। বেশিই জাদুবাস্তব ঘেঁষা। সহজ, সুন্দর কিন্তু গভীর অভিঘাত তৈরি করা গল্প কম।

বাংলাদেশের সাহিত্যচর্চা অনেকটাই বইমেলা কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। এই বিষয়টাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

হাসান মাহবুব : ভালো লাগে না। বই পড়া নিয়ে কথা বলতেই ইচ্ছা করে না। এই যে বইমেলায় এত স্টল, এত মানুষ, এরা কেন আসে? আসে ঘুরতে অথবা পরিচিতদের বই কিনতে। এমন মানুষ খুব কম, যারা নতুন বইয়ের খবর রাখে, নতুন কারা কী লিখছে জানে, অথবা স্টলে গিয়ে বই উল্টেপাল্টে দেখে হুট করে আনকোরা নতুন এক লেখকের বই পছন্দ হয়ে গেলে কিনে ফেলে। সেইসব দিন শেষ। আমি নিজেও তো আগের মতো অত বই পড়ি না। কাকে কী বলব! তাই চলুক, যেভাবে চলছে। এই অবস্থা পরিবর্তন হবে না।

বইমেলায় সেলিব্রেটি ও বিভিন্নভাবেই ভাইরাল ব্যক্তিরা বই বের করছেন। সেটা নিয়ে বিতর্ক যেমন হচ্ছে, আবার সেইসব বইগুলোর বেশ কাটতিও আছে। এতে বইমেলার উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে কি? বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন?

হাসান মাহবুব : তাদের বই করা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। বই যে কেউ প্রকাশ করতে পারে। জুসি আর ট্রেন্ডি বিষয় নিয়ে মানুষের বরাবরই আগ্রহ। এটা সবখানেই। বিক্রি হবে, এটাও স্বাভাবিক। কিন্তু কথা হলো, যে লেখক সাধনা করছে, ভাবছে, নতুন একটা লেখার জন্যে খাটছে, বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে, সৃষ্টির আনন্দে উদ্ভাসিত হচ্ছে, তাদের কোনো স্থান নাই এখানে। সেলিব্রিটিদের বই বিক্রি হচ্ছে বলে যে প্রকৃত লেখকদের বই বিক্রি হচ্ছে না, এমন না বিষয়টা। আগের উত্তরের জের ধরেই বলি, মানুষের বই পড়ার অভ্যাস কমে গেছে। এখন আত্মিক চাহিদার চেয়ে বস্তুগত চাহিদা বেশি প্রাধান্য পায়। যেই মাল বাজারে বেশি চলবে, সেটাই আসবে। কিছু করার নাই। তবে ভুষিমালের আড়তদারদের এই প্রতিযোগিতাতে সাধকরা কিন্তু কখনই হারিয়ে যাবে না। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো এই মানুষগুলি সবসময় থাকবে। একদিন মরে যাবে, কিন্তু তার আগ পর্যন্ত লিখে যাবে। 

Link copied!