নারীর সংগ্রাম চিরকালের। সংসার, কর্মক্ষেত্র, সামাজিক দায়িত্ব থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে একজন নারী যেভাবে সবকিছু সামলাতে পারে শত চেষ্টা করেও একজন পুরুষ তা পারে না। বর্তমানে বেশিরভাগ নারীকেই জীবিকার জন্য ছুটতে হয়। ঘরে-বাইরে সবদিক গুছিয়ে চলতে হয়। তারমধ্যে যাদের সন্তান ছোট, সেই কর্মজীবী মায়ের লড়াইয়ের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এতসবের পরে নিজের দিকে তাকানোরও সুযোগ হয় না অনেকের। তবে কিছুটা কৌশলী হলে দুই দিকেই সবকিছু সহজ ও সুন্দরভাবে করা সম্ভব হবে। চাকরির পাশাপাশি সংসারও সুন্দরভাবে সামলে নেওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক-
সময়
এই কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময় ভাগ করে নিলে আপনার জন্য সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। কারণ আপনার হিসাব থাকবে কখন কোন কাজটি করবেন। এক সময়ের কাজ আরেক সময় করতে যাবেন না। অফিসের কোনো কাজ বাড়িতে নিয়ে যাবেন না অন্যদিকে বাড়ির বিষয় অফিস থেকে দূরে রাখুন। দিনের মধ্যে কয়েকটি ভাগে সেট করে নিয়ে প্রত্যেক ভাগের কাজ সময়মতো করলে চাপ হবে না। যে কাজটি আপনাকে করতেই হবে, সেটি আনন্দ নিয়ে করুন।
অগ্রাধিকার
আমাদের জীবনের অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করা জরুরি। অনেক সময় ভুল জায়গায় আমরা আমাদের সময় এবং মূল্যবান আরও অনেককিছু খরচ করে ফেলি। এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আপনার জীবনে কাদের এবং কিসের গুরুত্ব বেশি, সেদিকে খেয়াল করুন। কোন কাজগুলো করতেই হবে, কোনগুলো না করলেও সমস্যা নেই, সেগুলোরও তালিকা করে ফেলুন। এতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ বাদ পড়বে না।
পরিবারকে সময়
অফিস এবং বাসার কাজের চাপে পরিবার থেকে দূরে সরে যাবেন না। মা-বাবা, স্বামী, সন্তান, ভাই-বোন, বন্ধু, আত্মীয় সবার জন্য কিছুটা সময় রাখুন। কাছের মানুষের সঙ্গে মন খুলে কথা বললেও মনের অনেক চাপ সরে যায়। নতুন করে কাজ করার স্পৃহা পাওয়া যায়। যদি এমন কেউ থাকে যে আপনাকে উৎসাহ দেয় না বরং স্পৃহা নষ্ট করে দেয়, তাদের থেকে দূরে থাকুন। সব সময় চেষ্টা করুন হাসিখুশি থাকতে, ইতিবাচক মানসিকতা মানুষের আশেপাশে থাকতে।
কাজ সংক্ষিপ্ত করা
যে কাজ যতটা সংক্ষিপ্ত উপায়ে করা যায় সে চেষ্টা করুন। ধরুন, যেখানে দুই পদ রান্না করে চালিয়ে নেওয়া যায় সেখানে অযথা পাঁচ-সাতটি পদ করে সময় খরচ করবেন না। কাপড় ধোয়ার মেশিন কেনার সামর্থ্য থাকলে নিজে কষ্ট করে কাপড় কাচতে যাবেন না। যতটা সম্ভব চাপমুক্ত রাখুন নিজেকে। সংসারের হরেকরকম কাজের ভেতর এই ছোট ছোট সময়গুলোতে বিশ্রাম নিন। অথবা যা ইচ্ছা করুন। যেসব ক্ষেত্রে চাপ না নিলেও চলে, সেগুলোতে মুক্ত থাকুন।
নিজের জন্য সময়
নিজের জন্য কিছুটা সময় অবশ্যই রাখুন। অনেকেই আছেন, যারা সবার কথা ভাবতে গিয়ে নিজের কথা ভুলে যান। তারা আশা করেন, সবাই তার কথা ভাববে। কিন্তু সবাই আপনার মতো নাও হতে পারে বা তাদের সেই সুযোগ নাও থাকতে পারে। তাই অন্য কারও কাছে প্রত্যাশা না করে নিজের কথা নিজেই ভাবুন। নিজের জন্য দিনের খানিকটা সময়ের ভাগ রাখুন। কারণ নিজে ভালো থাকলেই সবাইকে ভালো রাখা সহজ হবে।