যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হারিকেন আইডার তাণ্ডবে জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমক বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেকটিকাট, পেনসিলভেনিয়া, ম্যারিল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়া রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আচমকা ঝড় আর প্রবল বর্ষণে ৪৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত সংস্থা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ঐতিহাসিক বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দেশটি এই বিপর্যয়কে জীবন-মৃত্যুর সঙ্কট হিসেবে বিবেচনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
বিবিসি আরও জানায়, নিউইয়র্ক সিটিতেই ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ১১ জন ভবনের বেজমেন্টে পানিবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন। পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় ৩ জন মারা গেছেন এবং কানেটিকাটে মারা গেছেন একজন।
নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হচাল বলেন, “আমাদের কোনো ধারণাই ছিলো না যে রাত ৮টা ৫০ থেকে ৯টা ৫০ এর মধ্যে সত্যিকার অর্থে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হবে এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পানি নিউ ইয়র্কের রাস্তা পর্যন্ত চলে আসবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে হোয়াইট হাউজের ব্রিফিংয়ে জো বাইডেন বলেন, “নিহতদের স্বজনের প্রতি সহানুভূতি জানাই। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ কথা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের যে ভয়ঙ্কর অবস্থার কথা বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন, এটা তারই প্রভাব।”
নিউইয়র্ক, নিউজার্সির গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে বলে জানান জো বাইডেন।
এদিকে বিশ্ব গণমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টির ফলে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি রাজ্যে সাবওয়ে স্টেশনগুলো পানি উঠে যায়। সাবওয়ে চলাচলও বন্ধ ছিলো। নিউ ইয়র্কের রাস্তায় গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। গাড়ির ভেতর থেকে সাহায্যের চিৎকার করছে সাধারণ মানুষ। বাস, ট্রেনের যাত্রীরা এক জায়গায় আটকে গেছে।
লোকজনকে রাস্তায় না যেতে পরামর্শ দিয়েছে নিউইয়র্কের পুলিশ।
নিউ জার্সির গভর্নর ফিল মার্ফি জানান, রাজ্যটিতে অন্তত ২৩ জন মারা গেছেন, যাদের অধিকাংশই পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার পর গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে মারা গেছেন।
“এই দুর্যোগে বেশ কিছু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। নিউইয়র্ক, নিউজার্সিসহ আশপাশের সড়ক পানিতে ডুবে বিকল হয়ে পড়া গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।”