• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সমুদ্রের গভীর তলদেশের মাছের ছবি তুললেন বিজ্ঞানীরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৩, ১১:৫৯ এএম
সমুদ্রের গভীর তলদেশের মাছের ছবি তুললেন বিজ্ঞানীরা

সমুদ্রের গভীর তলদেশের মাছের ছবি তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের অতল গহ্বরে অনুসন্ধানের সময় ৮ হাজার ৩৩৬ মিটার (২৭ হাজার ফুটের বেশি) গভীরে একটি স্নেইলফিশের ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করা গভীরতম মাছ এটি।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া এবং টোকিও ইউনিভার্সিটি অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা রোববার (২ এপ্রিল) স্নেইলফিশটির ফুটেজ প্রকাশ করেছেন। যা গত সেপ্টেম্বর মাসে জাপানের গভীর সামুদ্রিক ট্রেঞ্চে সি রোবটের মাধ্যমে ধারণ করা হয়েছিল।

গভীরতম স্নেইলফিশের চিত্রগ্রহণের পাশাপাশি, বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের ৮ হাজার ২২ মিটার গভীরতায় আরও দুটো স্নেইলফিশ ধরতে সক্ষম হয়েছেন। যা সমুদ্রের গভীরতম জায়গা থেকে মাছ ধরার আরেকটি রেকর্ড। এর আগের ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ধারণ করার রেকর্ডটি ছিল ২০০৮ সালে। সে সময় ৭ হাজার ৭০৩ মিটার গভীর থেকে একটি স্নেইলফিশ এর ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। তখন বিজ্ঞানীরা ৮ হাজার মিটার গভীর থেকে মাছ ধরতে সক্ষম হননি।

এই অভিযানের নেতৃত্বদানকারী মিন্ডারু-ইউডাব্লিউএ ডিপ সি রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী অ্যালান জেমিসন বলেন, “এই আবিষ্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, একটি নির্দিষ্ট ধরণের মাছ কত গভীরতায় নামতে সক্ষম সেটি আমাদেরকে দেখায়।”

সমুদ্রে গভীরতম অঞ্চলে মাছের সংখ্যার পরিমাণ সম্পর্কে জানার জন্য ১০ বছর ধরে চলমান একটি গবেষণার অংশ হিসাবে বিজ্ঞানীরা জাপানের ট্রেঞ্চে ভিডিওটি ধারণ করছেন। স্নেইলফিশ লিপারিডে গোত্রের সদস্য। জেমিসন জানান, “অধিকাংশ স্নেইলফিশই অগভীর জলে বাস করে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বেশি গভীরতাতেও এগুলোর কিছু বেঁচে থাকে।”

গত বছর দুই মাস ধরে চলা সমীক্ষার জন্য জাপান, গভীর সামুদ্রিক ট্রেঞ্চে তিনটি হাই-রেজোল্যুশন ক্যামেরা লাগিয়ে ‘ইজু-ওগাসাওয়ারা এবং রুকিউ’ নামের তিনটি স্বয়ংক্রিয় সামুদ্রিক রোবট নামিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইজু-ওগাসাওয়ারা ট্রেঞ্চের ফুটেজে দেখা যায়, গভীরতম স্নেইলফিশ সমুদ্রতলের অন্যান্য ক্রাস্টেসিয়ানদের পাশাপাশি শান্তভাবে ঘোরাফেরা করছে।

অন্য একটি ফুটেজে দেখা যায়, ৭ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার ২০০ মিটার গভীরতায় একদল মাছ এবং ক্রাস্টাশিয়ানকে সামুদ্রিক রোবটের সাথে বাঁধা টোপের পেছনে ঘুরছে।

সমুদ্রের গভীরতম অংশের চরম পরিবেশে এই মাছগুলো কীভাবে বেঁচে থাকে, তা জানা যাবে মাছ দুটির ওপর গবেষণা চালিয়ে। মাছগুলোর ছোট চোখ, স্বচ্ছ শরীর এবং অন্য মাছকে ভাসতে সহায়তা করা সুইম ব্লাডার না থাকায় এগুলো সমুদ্রের গভীরতম অঞ্চলে টিকে থাকতে পারে।

বিজ্ঞানীরা এতো গভীরতায় বসবাসকারী এই প্রাণীগুলো সম্পর্কে আরও বেশি জানতে চান, তবে এর সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো পর্যাপ্ত অর্থ।

জীববিজ্ঞানী অ্যালান জেমিসন জানান, প্রতিটি ল্যান্ডার রোবট অ্যাসেম্বল এবং অপারেটর করতেই ২ লক্ষ মার্কিন ডলার খরচ হয়। মূল চ্যালেঞ্জ হলো যে এই গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যয়বহুল এবং বিজ্ঞানীদের কাছে এতো অর্থ নেই।

Link copied!