• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নিখোঁজ সাবমেরিনের সবাই মারা গেছেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩, ১০:২১ এএম
নিখোঁজ সাবমেরিনের সবাই মারা গেছেন

আটলান্টিক সাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিনে (টাইটান) থাকা পাঁচ আরোহীর কেউই জীবিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড এক সংবাদ সম্মেলনে এ খবর জানিয়েছে। একইভাবে খবরটি নিশ্চিত করেছে ওই সাবমেরিন পরিচালনাকারী সংস্থা ওশানগেট। ধারণা করা হচ্ছে, পানির প্রচণ্ড চাপে সাবমেরিনটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বোস্টন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।

তিনি জানান, তারা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই অপর একটি ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান। সেখানে সাবমেরিন টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। তখনই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে টাইটান এবং ভেতরে থাকা পাঁচজনের পরিণতি। তারপরও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কানাডা, ফ্রান্সসহ আরও কয়েক দেশের উদ্ধারকারী দল।

কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে। যার মধ্যে রয়েছে টাইটানের সামনের নাকের অংশ, কাঠামোর বাইরের অংশ এবং বড় একটি ধ্বংসস্তূপ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আমাদের মনে হচ্ছে সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করতে পেরেছি।

নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হবে কি না, এটি এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। কারণ, বর্তমানে সেখানকার অবস্থা তেমন ভালো নয়।

গত রোববার (১৮ জুন) সাগরের তলদেশে পড়ে থাকা টাইটানিক জাহাজ দেখতে পাঁচ আরোহী নিয়ে সমুদ্রে ডুব দেয় ছোট আকৃতির সাবমেরিন। এর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই এটির সঙ্গে ওপরে থাকা জাহাজের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।

সাবমেরিনটিতে ঠিক কখন বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেটি এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা।

এমন খবরে তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার।

এ ছাড়া বুধবার সমুদ্রের নিচ থেকে যে শক্তিশালী শব্দ এসেছিল তার সঙ্গে টাইটান সাবমেরিন কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

যেহেতু সাবমেরিন বিস্ফোরণ হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাই সেখানে থাকা উদ্ধারকারী জাহাজ ও মেডিকেল টিমকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে সাগরের তল দেশে যে ধ্বংসস্তূপ পাওয়া গেছে, সেখানে তদন্ত চালাবে মার্কিন কোস্টগার্ড। ফলে সেখানে গভীর সমুদ্রের দূরনিয়ন্ত্রিত যান থাকবে।

টাইটানের ভেতরে যাত্রীরা হলেন পাকিস্তানি  ব্যবসায়ী ও ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশানগেটের মালিক স্টকটন রাশও আছেন। আরেকজন পর্যটক ছিলেন ব্রিটেনের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং। যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী সংস্থা ‍‍‘অ্যাকশন এভিয়েশনে’র চেয়ারম্যান তিনি। গভীর সমুদ্রে যাওয়ার নেশা ছিল তার। এ ছাড়া ৭৭ বছর বয়সী ফরাসি পরিব্রাজক নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডাইভার পল-হেনরি নারগোলেট।

টাইটানিক জাহাজটি ১৯১২ সালে সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক আসার পথে একটি বরফ খণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় জাহাজ এবং প্রথম যাত্রাও তা শেষ করতে পারেনি। ওই দুর্ঘটনায় জাহাজে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৮৫ সালে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়।

Link copied!