আফগানিস্তানে ইন্টারনেট ও মোবাইল টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে দেশটির তালেবান প্রশাসন এর কোনো তাৎক্ষণিক ব্যাখ্যা দেয়নি। যদিও এর আগে বেশ কয়েকবার অনলাইনে অশ্লীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। এ ছাড়া নৈতিকতার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রদেশে ফাইবার-অপটিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল তালেবান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট অ্যাক্সেস মনিটরিং সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ইন্টারনেট সংযোগ প্রায় ১ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। সোমবার ধাপে ধাপে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে টেলিফোন পরিষেবাও প্রভাবিত হয়।
আফগানিস্তানের বেসরকারি চ্যানেল টোলো নিউজ তাদের দর্শকদের পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে বলেছে, কর্তৃপক্ষ সেলফোনের জন্য ৩জি ও ৪জি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করতে এক সপ্তাহের সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, শুধু পুরোনো ২জি স্ট্যান্ডার্ড চালু আছে।
কাবুল, হেরাত ও কান্দাহারে ইন্টারনেট সংযোগে সবচেয়ে বেশি বিঘ্ন ঘটেছে। তালেবান নেতৃত্বের নীতি ক্রমশ কঠোর হচ্ছে। এই মাসে, কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘে কর্মরত নারীদের তাদের কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। এর আগে, নারীদের অনেক পেশা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং মেয়েদের উচ্চবিদ্যালয়ে যাওয়াও বন্ধ করা হয়েছে।
তালেবান কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা তাদের ইসলামি আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী নারীদের অধিকারকে সম্মান করে। আফগানিস্তানের বাইরে অবস্থানরত নারী অধিকারকর্মী সানাম কবিরি বলেন, তালেবান ইতিমধ্যেই নারীদের জন্য স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, বিনোদন এবং ক্রীড়া সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট বলছে, এই শাটডাউনের কারণে আফগান গণমাধ্যম যেমন কাবুল-ভিত্তিক টোলো নিউজ এবং লন্ডন-ভিত্তিক আফগানিস্তান ইন্টারন্যাশনালের স্যাটেলাইট টিভি সম্প্রচারও প্রভাবিত হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতাল, সরকারি এবং বেসরকারি কার্যালয়ের পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়েছে। এ ছাড়া কাবুলের কিছু ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
কঠোর ইসলামপন্থী তালেবান সরকারের অধীনে এই প্রথম আফগানিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা চলতি মাসের শুরুতে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করার আদেশ দেন। এটি ছোট প্রদেশ বালখ থেকে শুরু হয়।
বালখের প্রাদেশিক প্রশাসনের মুখপাত্র হাজী আতাউল্লাহ জাইদ তখন বলেন, ‘অনৈতিকতা প্রতিরোধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য দেশের ভেতরে একটি বিকল্প তৈরি করা হবে।’