• ঢাকা
  • সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২,
  • ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭
সিএনএনের প্রতিবেদন

শেখ হাসিনার রায় কার্যকর করতে চায় ঢাকা, বড় বাধা ভারত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ১২:০১ পিএম
শেখ হাসিনার রায় কার্যকর করতে চায় ঢাকা, বড় বাধা ভারত

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। তবে এই রায় কার্যকরের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে ভারত। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন শনিবার (২২ নভেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

শেখ হাসিনা একসময় ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং ১৯৭০-এর দশকে বিপ্লবী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে রাজনৈতিক উত্থানের পথে ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে শীর্ষে ওঠার পর তার পথ পরিণত হয়েছে নাটকীয় পতনে। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ভারতে আত্মগোপন করেন।

বাংলাদেশে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আন্দোলনের ফলে তার সরকারের পতন ঘটে এবং তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। এখন তাকে ফিরিয়ে আনার প্রশ্ন দুই দেশের কূটনীতিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়নে জড়িয়ে আছে।

বাংলাদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুবাশ্বর হাসান বলেন, তিনি জনরোষ এড়াতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ভারতে লুকিয়ে আছেন, আর মৃত্যুদণ্ড পেলেন। ঘটনাটা সত্যিই ব্যতিক্রমী।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন একধরনের শেক্সপিয়রের ট্র্যাজেডির মতো। ১৯৭৫ সালের আগস্টে সামরিক অভ্যুত্থানে তার বাবা, মা ও তিন ভাই নিহত হন। হাসিনা ও তার বোন তখন পশ্চিম জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান। এরপর ছয় বছর নির্বাসনে কাটান, যা ভবিষ্যতে ভারতের প্রতি তার আস্থাকে দৃঢ় করে।

দেশে ফেরার পর তিনি দেখেন জনগণ নতুন আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। এরপর ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন। পরবর্তী ১৫ বছরে কঠোর শাসন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন, মিডিয়া ও বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন বাড়ে।

সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের কঠোর দমন-পীড়নে ১৪০০ মানুষ নিহত হলেও আন্দোলন থামেনি এবং হাসিনার সরকার পতিত হয়।

ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় কার্যকর করা এখনো ব্যাহত। ভারতের আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক অপরাধে কাউকে ফেরত পাঠানো যায় না। সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক অনিল ত্রিগুনায়েত বলেন, ভারত হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। তাই ফেরত পাঠানো সহজ নয়।

শেখ হাসিনা এখনো সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন, এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে পারেন। এই কারণে ভারত তাড়াহুড়ো করবে না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রায়ের পরদিনই ভারতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে, “শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব।”

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!