• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২,

নাক দিয়ে মাথায় ঢুকছে, মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবার সংক্রমণে ভারতে ১৯ জনের মৃত্যু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ১২:০২ পিএম
নাক দিয়ে মাথায় ঢুকছে, মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবার সংক্রমণে ভারতে ১৯ জনের মৃত্যু
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কেরালায় ‘মস্তিষ্ক-খেকো’ অ্যামিবার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস (পিএএম) নামক এই মারাত্মক মস্তিষ্কের সংক্রমণটি নায়েগলেরিয়া ফাওলেরি নামক অ্যামিবার কারণে হয়। চলতি বছর কেরালায় পিএএমে আক্রান্ত ৬৯ জনের মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ এটিকে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আগে কোঝিকোড় এবং মালাপ্পুরমের মতো কয়েকটি জেলায় এর সংক্রমণ সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন এটি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে তিন মাসের শিশু থেকে ৯১ বছর বয়সী বৃদ্ধও রয়েছে।

কেরালা সরকারের একটি নথি অনুযায়ী, পিএএম দেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। এটি মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট করে, সেখানে মারাত্মক ফুলে যায় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হয়।

এই ‘মস্তিষ্ক-খেকো’ অ্যামিবা গরম, বিশেষত স্থির, মিঠা পানিতে পাওয়া যায়। সাধারণত, এটি সাঁতার কাটা, ডুব দেওয়া বা গোসল করার সময় নাকের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে।

এনডিটিভি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পানির তাপমাত্রা বাড়ায় এই অ্যামিবা আরও সহজে বংশবৃদ্ধি করতে পারছে। উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে বেশির ভাগ মানুষ পানিতে নামছে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তবে এই রোগ মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না।

এই রোগ নির্ণয় করা কঠিন হওয়ায় এর মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি। এর লক্ষণগুলো ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের মতো। যেমন–মাথাব্যথা, জ্বর, বমি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া। লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর এটি দ্রুত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে মৃত্যু ঘটায়।

পিএএম থেকে বেঁচে যাওয়া বেশিরভাগ রোগী খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছিল। বীণা জর্জ জোর দিয়ে বলেছেন, ‘দ্রুত শনাক্তকরণই মূল চাবিকাঠি’। চিকিৎসার জন্য অ্যামিবানাশক ওষুধের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়, যা রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে। 

কেরালা সরকার সংক্রমণের বিস্তার রোধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলো হলো–

১. স্থির বা অপরিষ্কার মিঠা পানিতে সাঁতার কাটা বা গোসল এড়িয়ে চলা।
২. মিঠা পানিতে নামার সময় নাকে ক্লিপ ব্যবহার।
৩, কুয়া এবং পানির ট্যাংকগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও ক্লোরিনেশন করা।
৪. যদি কেউ স্থির পানিতে থাকার পর পিএএমের মতো লক্ষণ অনুভব করে, তবে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!