আফগানিস্তানে নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেশটিতে ক্ষমতা দখলে নিয়েছে তালেবান। দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মজীবী আফগান নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে তালেবান।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “কর্মজীবী নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ঘরে তাদের থাকতে হবে।”

বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) কাবুলে সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র এ নির্দেশ দেন। 

জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই যে কীভাবে নারীদের সঙ্গে আচরণ করতে হয় বা তাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়। পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। এটি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য।”

ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে নারীদের অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তালেবানরা।

তবে তালেবানদের দ্বারা নির্যাতনের ‘নির্ভরযোগ্য’ কিছু প্রতিবেদন তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। যার মধ্যে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উঠে এসেছে।

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় বক্তব্যে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশলেট মঙ্গলবার বলেন, “তালেবানদের দ্বারা শিশু সৈনিক নিয়োগ এবং মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা জানতে পেরেছি।” 

পরে কাউন্সিল নারীদের অধিকারের প্রতি তার ‘অটল অঙ্গীকার’ নিশ্চিত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে।

কিন্তু অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছিল, তা শেষমেশ অনুমোদন পায়নি।

এর আগে ২০০১ সালের আগে তালেবান, যখন আফগানিস্তান শাসন করত, তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করেছিল।

এদিকে মঙ্গলবার কাবুলে সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র বলেন রাজধানী কাবুল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন উচ্ছেদের কথা তুলে ধরে বলেন, “আমেরিকার উচিত আফগানদের চলে যাওয়ার জন্য ‘উৎসাহিত করা’ বন্ধ করা। কারণ আফগানিস্তানের তাদের প্রতিভার প্রয়োজন রয়েছে।”

এছাড়া দেশটির বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে মুখপাত্র বলেন, “আফগানদের সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়।”

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ত্যাগের জন্য বেঁধে দেওয়া ৩১ আগস্টের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই।

১৫ আগস্ট কাবুলের পতনের মধ্য দিয়ে দ্রুতই আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানের মাধ্যমে ২০০১ সালে পতন হয় তালেবানের। আগস্টের শুরুতে প্রায় ২০ বছর পর আবারও দেশটির নিয়ন্ত্রণ পায় বিদ্রোহীরা।