• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩০, ১৬ শা'বান ১৪৪৬

যে হরমোনের কারণে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি থেমে যায়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
যে হরমোনের কারণে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি থেমে যায়
ছবি: সংগৃহীত

শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ হরমোন কর্টিসল। এই হরমোন হলো জীবন দানকারী। কর্টিসল ক্ষরণের কারণে  শরীরের রক্তচাপ, বিপাক হার, ফ্যাট বা শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। শরীরের প্রদাহ কমাতেও এই হরমোনের ভূমিকা অনেক। তাই এই হরমোনের তারতম্যের কারণে সার্বিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশ থমকে যেতে পারে।

শিশুদের শরীরেও এই হরমোনের তারতম্য হয়। যা থেকে সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। ভারতের  ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’-এর এক সমীক্ষায় জানা যায়, ছোটদের সার্বিক বৃদ্ধি এবং হাড়ের বৃদ্ধি ঠিক রাখতে কর্টিসলের মাত্রাও ঠিক থাকা জরুরি। কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা ঠিক রাখতে কর্টিসলের ভূমিকা রয়েছে। শিশুদের শরীরে এই হরমোন বেড়ে গেলে ‘কুশিং’স সিনড্রোম’ হতে পারে। যা শিশুর বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশে প্রভাব ফেলে। আবার এই হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলে হতে পারে  অ্যাড্রিনালিজম। আর অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে সমস্যা হলে কর্টিসলের ক্ষরণ কমে যায়। তখনই শিশুর বৃদ্ধি, হাড়ের গঠনে জটিলতা দেখা দেয়।

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ ২৯৫ জন শিশুর ওপর সমীক্ষা চালায়। য়েছে। এদের মধ্যে ১৬০ জন শিশুর বয়স ৩ বছর এবং বাকি ১৩৫ জনের বয়স ৬ বছর ও তার বেশি। গবেষকেরা জানায়, যে সব শিশুর শরীরে কর্টিসলের মাত্রার তারতম্য রয়েছে তাদের উচ্চতা বাড়ে না। হাড়ের গঠনেও নানা জটিলতা থেকে  যায়। এমনকি এরা মানসিকভাবেও দুর্বল হয়।

গবেষকরা জানান, শিশুরা মানসিক চাপে থাকলে কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এমন হতে পারে। এছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা নেশা করলে কিংবা ওজন কমানো বা বাড়ানোর জন্য স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খেলে গর্ভস্থ শিশুর কর্টিসলের মাত্রার তারতম্য হয়।

গবেষকরা আরও জানান, কর্টিসল হরমোনের তারতম্য হলে শিশুর ওজন খুব কমে যায়। আবার হঠাৎ বেড়ে যাবে। পেটের অংশ স্ফীত হতে থাকে। শিশুর উচ্চতা বাড়বে না, হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। রক্তচাপ  বেড়ে যায়। পেশির গঠন ঠিকমতো হবে না, ফলে পেশিও দুর্বল হবে। শিশু ক্লান্তি অনুভব করবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হবে। ছোট থেকেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে। শিশুর নিজস্ব চিন্তাভাবনা দুর্বল থাকবে। কম বয়স শিশুর মধ্যে উদ্বেগ, অবসাদ দেখা যাবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে সিটি স্ক্যান, পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে এমআরআই করে এই হরমোনের মাত্রা বোঝা যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

Link copied!