অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন গত রোববার (৪ সেপ্টেম্বর)। এই কিংবদন্তিকে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি তার পরিবার, বন্ধু-স্বজন, ভক্ত-শুভাকাঙক্ষীরা।
এরইমধ্যেই সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় মিলনায়তনে এক স্মরণসভার মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানো হলো কালজয়ী এই গীতিকবিকে।
যৌথভাবে এ স্মরণসভার আয়োজন করে গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
আয়োজনের শুরুতেই গাজী মাজহারুল আনোয়ার স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর একে একে বক্তারা তাদের স্মৃতিচারণে গানের গাজীকে তুলে আনেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্ত্রী জোহরা গাজী ও কন্যা দিঠি আনোয়ার ও বোনের স্মৃতিচারণের সময় চোখ ভিজে আসে উপস্থিত সবার৷
গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে স্মরণ করে জোহরা গাজী বলেন, “গাজী মাজহারুল আনোয়ার একটি ইতিহাস, একটি বাংলাদেশ। তার ইতিহাসের সঙ্গে থেকে আমি ধন্য। তিনি একজন অত্যন্ত ভালো, নিরহংকার, সৎ ব্যক্তি ছিলেন। পারিবারিক জীবনেও তিনি সার্থক ও সফল মানুষ। তিনি একজন স্নেহময়ী স্বামী ও পিতা হিসেবে, সফল নানা ও দাদা হিসেবেও। আমি একজন প্রতিভার আগুনের সঙ্গে বসবাস করেছি। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি সেই আগুন প্রজ্জ্বলিত রাখতে। তিনি আমাকে রুনি বলে ডাকতেন। আমাকে বলতেন- মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেন আমার হাতে কলম থাকে, দোয়া করো।”
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সৃষ্টিকে সংরক্ষণের কথা উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “গাজী মাজহারুল আনোয়ার বাংলা গানের কিংবদন্তি। তার গানকে সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য তার পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে৷ সরকারের পক্ষ থেকেও চেষ্টা করা হবে।”
গীতিকবি সংঘের আজীবন সদস্য ও দেশবরেণ্য গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বলেন, “গাজী মাজহারুল আনোয়াররের সঙ্গে আমার বয়সের পার্থক্য ১১ দিনের। আমাকে ফোন করে তার বইয়ে একটি লেখা দিতে বলেছিলেন। তার বইয়ে নাকি আমার লেখা থাকতেই হবে। উনি যখন বলেছিলেন, আমি তখন মনে মনে ভাবলাম যে থাকতেই হবে। আমার যত অনুভূতি তার সম্পর্কে, আমার হৃদয়ে তার যে স্থান সেই সম্পর্কে আমি লিখেছি আমার লেখার মধ্যে। গাজী মাজহারুল আনোয়ার হৃদয়ের কোথায় স্থান করে নিয়েছে আপনারা তা সহজেই অনুধাবন করতে পারেন।”
স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সংগীতশিল্পী মো. খুরশিদ আলম, কুমার বিশ্বজিৎ, আবিদা সুলতানা, রফিকুল আলম, নকীব খান, মনির খান, রবি চৌধুরী, সুরকার শেখ সাদী খান, ফোয়াদ নাসের বাবু, রিপন খান, গীতিকার রিটন অধিকারী রিন্টু, মনিরুজ্জামান মনির, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, আসিফ ইকবাল, জুলফিকার রাসেল প্রমুখ।
স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বোন নাহিদা আক্তার নাসরিন, মেয়ে দিঠি আনোয়ার, ছেলে সরফরাজ আনেয়ার উপলসহ আরও অনেক আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙক্ষী। শোকসভার সঞ্চালণা করেন গীতিকবি সংঘের সাংস্কৃতিক সম্পাদক জয় শাহরিয়ার।






























