রেকর্ড সংখ্যক সিনেমা মুক্তি পেয়েছে এবারের ঈদুল ফিতরে। বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে আটটি সিনেমা প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে পাঁচটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর। তবে নিজের এত ছবি একই সময় মুক্তি পাওয়ায় খুব একটা খুশি নন এই অভিনেতা।
প্রেক্ষাগৃহের সার্বিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি শঙ্কিত। আমার পাঁচটির বাইরে আরও তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে আটটি ছবি। আমাদের এমনিতে প্রেক্ষাগৃহের সংকট। এর মধ্যে ঈদের সময় যদি সিঙ্গেল স্ক্রিন বাড়ে, সেখানে তো শাকিব খান আর মিশা সওদাগরের আধিপত্য বেশি। ফ্যান চলছে না, শার্ট খুলে গরমের মধ্যে দর্শক ছবি দেখছেন—এমন চাহিদাসম্পন্ন হিরো শাকিব খানের পর তো তৈরি হয়নি। আমি কেন, এটা পরিচালক, প্রযোজক, প্রদর্শক—সবাই জানেন। এবার সব মিলিয়ে ১৮০টি প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে আমরাই নিয়ে নিয়েছি ১০০টি, বাকি সবাই মিলে ৮০টি! আমরা যে নায়ক ও ভিলেন জুটি হিসেবে সেরা, এটা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে প্রমাণিত। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা করেই আমরা এটা তৈরি করেছি, তা সিনেপ্লেক্স আর সিঙ্গেল, যেখানেই হোক না কেন।’
সিনেমা হলের এমন অবস্থা জেনেও একসঙ্গে এতগুলো ছবির মুক্তির সিদ্ধান্ত ঠিক নয় বলে জানান তিনি। নিজের পাঁচটি ছবি প্রকাশ পেলেও সম্পূর্ণভাবে খুশি হতে পারছেন না তিনি। এই বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘এত ছবি একসঙ্গে মুক্তি পাওয়াটা সুইসাইড গেম। যেখানে নিয়মিত চলছে, সে রকম ৮০টা প্রেক্ষাগৃহ নেই, সেখানে ৮টা ছবি মুক্তি পায় কীভাবে! কেউ পাঁচটা, কেউ আটটা প্রেক্ষাগৃহ পেয়েছে! আমাদের ‘লিডার’–এর পর সিরিয়াল পেয়েছে ‘শত্রু’ ২৪টি, ‘জ্বীন’ ১৪টি, ‘কিল হিম’ ১১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। আমার মতে, একজন প্রযোজক অনেক কষ্ট করে বিনিয়োগ করছেন, টাকা ওঠার ব্যাপার আছে। সর্বোচ্চ ৪টা ছবি মুক্তি পেলে প্রযোজকেরা হয়তো টাকা তুলতে পারতেন। সেখানে ৫টা, ৭টা, ১১টা কিংবা ১৪টা প্রেক্ষাগৃহে ছবি চালিয়ে টাকা তোলাটা একেবারেই অসম্ভব। আমার মাথাই কাজ করে না, কেন তাঁরা এমনটা করলেন। তাই আমার পাঁচটা ছবি মুক্তি পেয়েছিল দেখেও আমি আনন্দিত নই।’
তবে এবারে শুধু শাকিব-মিশার ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ ১০০ হল পেয়েছে। শাকিবের সাথে মিশার জুটির জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে মিশা বলেন, এটাতেই তো প্রমাণিত হয়, শাকিবের সঙ্গে খল চরিত্রে মিশার জুটিটাই দর্শক পছন্দ করেন। আমরা অনেক দিনের পুরোনো। শাকিবের সঙ্গে আমার জুটিটা পুরোনো। আমরা দুজন থাকলে সিঙ্গেল স্ক্রিনের মেক্সিমাম দর্শক আমাদের পক্ষেই থাকেন। এটা অনেক দিনের প্রচেষ্টায় আমরা বানিয়েছি।
ঈদুল আজহায়ও আটটি বা তার বেশি ছবি মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে সে বিষয়ে কি বলবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এই খল অভিনেতা বলেন, ‘সেই একই কথা, মোটেও ঠিক হবে না। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, যেমন প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতিসহ যাঁরা দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন, তাঁদের সবাইকে একসঙ্গে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এতগুলো ছবি মুক্তি মোটেও ভালো সিদ্ধান্ত নয়। শাকিব খানের ছবি আগামী ঈদেও আসবে, ওই ছবিও নিঃসন্দেহে শতাধিক প্রেক্ষাগৃহ নেবে। তাহলে বাকি অল্প কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে এতগুলো ছবি মুক্তি দিলে তো প্রযোজকেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তিন-চারটির বেশি ছবি মুক্তি দেওয়া ঠিক হবে না।’
আপনার মতামত লিখুন :