মেহেরপুরে আয়োজিত হতে যাওয়া জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পী জেমসের কনসার্ট শেষমেশ প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় বাতিল করা হয়েছে। আয়োজক সংগঠন ‘সূর্য ক্লাব’ দাবি করছে, প্রশাসনিক দফতরের আশ্বাস সত্ত্বেও হঠাৎ অনুমতি না দেওয়ার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক চাপ ও অজ্ঞাত ‘মুরব্বিদের’ প্রভাব।
আগামী ১০ অক্টোবর মেহেরপুর জেলা স্টেডিয়ামে কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল। পরে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে গোভীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের কথা ভাবলেও তাতেও মেলে না প্রশাসনের অনুমতি। বিষয়টি ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ও তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সূর্য ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাসিম রানা বাঁধন জানান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার প্রাথমিকভাবে অনুমোদনের আশ্বাস দিলেও, পরে ‘মুরব্বিদের খুশি’ করতে না পারার অজুহাতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও এই ‘মুরব্বি’ কারা—সে বিষয়ে কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
তাদের অভিযোগ, জেলা বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামীর কিছু অংশ কনসার্ট নিয়ে আপত্তি তোলে। বিশেষ করে সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণের ভাই বিএনপি নেতা মারুফ আহমেদ বিজনকে প্রধান অতিথি না করায় কনসার্টে বাধা এসেছে বলে দাবি আয়োজকদের।
তবে মারুফ আহমেদ বিজন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি নিজেই বলেছি, আমাদের সাথে প্রশাসনের সম্পর্ক নেই। আমি বললে বরং উল্টোটা হতে পারে।’
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা ও গোয়েন্দা সংস্থার অনাপত্তি না থাকায় কনসার্টের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ-সংক্রান্ত চিঠিতেও একই ভাষায় স্পষ্ট করা হয়েছে।
স্টেডিয়ামে ভেন্যু চূড়ান্ত করার পর একদল খেলোয়াড়ের মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যমে বিরোধিতা করা হয় বলে দাবি ক্লাবটির। এরপর গোভীপুর মাঠ দেখতে যাওয়ার সময় পুলিশ কর্মকর্তারাও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, আর্থিকভাবে তারা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন এবং হাইকোর্টে রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এনসিপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও জামায়াতের প্রতিনিধিরা কনসার্ট বন্ধে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে আয়োজকদের দাবি, পর্দার আড়াল থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কনসার্টটি ঠেকানো হয়েছে।
কে বা কারা এই আয়োজন ঠেকিয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। আয়োজকরা বলছেন—"সবই অনুমাননির্ভর", কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে—বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক আয়োজন কি রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে পরাজিত হলো?