• ঢাকা
  • বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩০, ২২ রজব ১৪৪৬
পুরোনো গানের মেধাসত্ব নির্ধারন

সংগীতের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, বলছেন সংশ্লিষ্টরা


রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ০১:৩৪ পিএম
সংগীতের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, বলছেন সংশ্লিষ্টরা

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন অনলাইনের জামানায় বিশ্ব। দুই দশক আগে মানুষ বিভিন্ন কণ্ঠশিল্পীর অ্যালবাম কিনে গান শুনতেন। এখন বিনামূল্যে গান শুনতে পারছেন অনলাইনে। ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডির সেই যুগ আজ অতীত। তবে সেই পুরনো গানের কদর এখনো কমেনি। সেকারণে পুরনো দিনের গানগুলো অনলাইনে প্রকাশ করা হচ্ছে।

কিন্তু এতে বাধে বিপত্তি। গানগুলোর মেধাসত্ব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এর সুরাহা করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যালবামের গান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করলে মেধাস্বত্ব পাবে চার পক্ষ।

এই চার পক্ষ হলেন— গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও লেবেল কোম্পানি। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত আছে, গানটিতে নতুন করে সংযোজন যদি না করা হয় তাহলে এই চার পক্ষ সমভাবে মেধাস্বত্ব পাবে।

বিষয়টি নিয়ে কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরীর সঙ্গে সংবাদ প্রকাশের কথা হয়। তিনি বলেন, “গানের মেধাস্বত্ব নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পীদের এক যুগ ধরে মতানৈক্য চলছিল। মেধাস্বত্ব জটিলতা নিরসনের বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ড গত মার্চের ২২ তারিখে একটি সভা করেছিল। সেই সভাতেই এই সিদ্ধান্ত হয়। আমি মনে করি এরপর আর কোনো জটিলতা থাকবে না।”

শুধু পুরোনো দিনের গান নয়, এই সময়ের ডিজিটাল বা অন্য মাধ্যমে গানের মেধাসত্ব নিয়েও জটিলতা চলছে। এই জটিলতারও সুরাহা করতে চায় কপিরাইট অফিস। সেই লক্ষ্যে সব পক্ষের মতামত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাফর রাজা চৌধুরী।

কপিরাউট অফিসের এই প্রজ্ঞাপনকে সাধুবাদ জানিয়েছে সিঙ্গার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, “গানের মেধাসত্ব বিভাজন নিয়ে যে জটিলতা ছিল, সেটি এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সমাধান হলো। এতে করে উভয়পক্ষই লাভবান হবে বলে মনে করি। আসলে এই জটিলতা সমাধানের দাবি আমরা অনেক দিন ধরে করে আসছিলাম। অবশেষে তা সফল হলো। আমার মনে হয় না এতে কারও দ্বিমত থাকতে পারে।”

এদিকে এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী বলে মনে করছেন গীতিকবি সংঘের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, “এই দিনটির অপেক্ষায় আমরা ছিলাম এতদিন। এতে করে কেউ আর আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হবেন না। এটি যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। এবার ডিজিটাল মাধ্যমের গানগুলোর মেধাসত্বের জটিলতা সমাধান করা জরুরি। আশাকরি সেটাও হয়ে যাবে।”

গত রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে পুরোনো ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডিতে প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত গানের রয়্যালিটির বিভাজনবিষয়ক সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “যে সকল পুরোনো গান পূর্বে কেবল সিডি/ভিসিডি ও ক্যাসেট নির্মাণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট লেবেল কোম্পানিকে নতুন করে অর্থ বিনিয়োগ কিংবা গীতিকার, সুরকার বা কণ্ঠশিল্পীকে পুনরায় কোনো মেধা বা শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়নি, এরূপ পুরোনো গানের ক্ষেত্রে গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী এবং লেবেল কোম্পানি প্রত্যেক পক্ষ ২৫ শতাংশ হারে রয়্যালিটি পাবেন মর্মে বোর্ড সভার সকল সদস্য কর্তৃক একমত প্রকাশ করা হয়।”

মেধাসত্ব বিভাজনের ক্ষেত্রে উল্লিখিত হার অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে কপিরাইট অফিসের পক্ষ থেকে।

Link copied!