মাদক মামলায় ঢাকার মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে হাজিরা দিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১১টায় তিনি আদালতে যান। দুপুর ১২টায় শুনানি শেষে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১০ অক্টোবর ধার্য করেন আদালত।
শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, “আজকে পরীমনির হাজিরা ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা উচ্চ আদালতে থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেননি। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দুটি পৃথক আবেদন দাখিল করেছেন। সেখানে তারা বলেছেন, পরীমনির মালিকানাধীন একটি হেরিয়ার গাড়ি এবং তার ব্যক্তিগত কিছু জিনিসপত্র যেমন- ল্যাপটপ, মোবাইল তার জিম্মায় নেওয়া প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলেছি, যিনি জিম্মার আবেদন করেছেন, সেই জিম্মার সাপক্ষে গাড়ির কোনো কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেননি। অন্য জিনিসপত্রের বিষয়েও কোনো কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেননি। উল্টো পরিমনির আইনজীবী বলেছেন, যখন পরীমনির বাসায় তল্লাশি চালানো হয়, তাকে গ্রেপ্তার করে সেগুলো নিয়ে গেছেন। তখন আমরা উত্তরে বলেছি, পুলিশের সঙ্গে পরীমনির কোনো শত্রুতা নেই। পুলিশ যেগুলো পেয়েছেন সেগুলোর জব্দ তালিকা করেছেন এবং জব্দ তালিকায় প্রত্যেকটা জিনিসের উল্লেখ আছে। সে ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা বা এই মামলার বাদী বা অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরীমনির কাছ থেকে এমন কোনো জিনিসপত্র নেয়নি যেটা জব্দ তালিকায় উল্লেখ নেই।”
সর্বশেষ বিজ্ঞ আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে সন্তুষ্ট হওয়ায়, এই মামলার গাড়ির মালিকানার বিষয়ে বিআরটিএ থেকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন এবং পরীমনি যেসব ব্যক্তিগত জিনিসপত্র চেয়েছেন, সেগুলোর বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী বলেন, “পরীমনির জামিনের পর আজকেই প্রথম হাজিরার দিন ধার্য ছিল। পরীমনি আজ আদালতে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা আদালতে দুটি আবেদন দাখিল করেছিলাম। একটি হচ্ছে জব্দ তালিকায় থাকা পরীমনির ব্যবহৃত হ্যারিয়ার গাড়িটি মূল মালিকের জিম্মায় হস্তান্তরের আবেদন, আরেকটি আবেদনে জব্দ তালিকায় থাকা পরীমনির ব্যবহৃত আইফোন, ল্যাপটপসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি হস্তাস্তরের আবেদন করা হয়েছে।”
নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী আরও বলেন, “আদালত বিআরটিএতে গাড়িটির মালিকানা যাচাইয়ের জন্য আদেশ দিয়েছেন। সেই প্রতিবেদন এলে গাড়িটি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বাকি জিনিসপত্রের বিষয়েও একই নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের বিচারক পরীমনিকে গাড়ির মালিকানার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন। পরীমনি বলেছেন, কাগজপত্র সব গাড়িতেই ছিল। সেগুলোসহ গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি জানান, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া পর্যন্ত পরীমনিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলে পরীমনিকে অবশ্যই আদালতে আসতে হবে এবং নতুন করে জামিন গ্রহণ করতে হবে।