৬০, ৭০ ও ৮০ দশকের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী জিনাত রেহানা বুধবার (২ জুলাই) সকাল ৮.৩০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে এই গুণী শিল্পীর বয়স হয়েছিলো ৭৭ বছর। জোহরের নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম ও চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিকেল ৩ টায় দ্বিতীয় জানাজার নামাজ শেষে বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে তিনি দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। জিনাত রেহানার শিল্পী হিসেবে পথ চলা শুরু হয় তার পরিবারের মাধ্যমে। তার মা জেব-উন-ন্নেসা জামাল ছিলেন গীতিকার ও লেখক, আর তাঁর খালা আঞ্জুমান আরা বেগম বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী। জিনাত রেহানার স্বামী ছিলেন টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক প্রয়াত মোস্তফা কামাল সৈয়দ।
তবে জিনাত রেহানাকে গানের জগতে আসার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন তার খালা কণ্ঠশিল্পী আঞ্জুমান আরা বেগম। তার সেই সময়কার কণ্ঠ শুনে বিখ্যাত সুরকার আবদুল আহাদ ও সমর দাস প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যান।
১৯৬৪ সালে বেতার ও ১৯৬৫ সালে টেলিভিশনের শিল্পী হিসেবে গান শুরু করেন জিনাত রেহানা। বেতারে ১৯৬৮ সালে জিনাত রেহানার ‘সাগরের তীর থেকে’ গানটি রেকর্ড করা হয়। এটি প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে শ্রোতাদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে মাঝে তাকে গানে কম দেখা যেত।
জিনাত রেহানার গাওয়া জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, ‘একটি ফুল আর একটি পাখি, বলতো কি নামে তোমায় ডাকি, ‘আমি কাকন দিয়ে ডেকে ছিলেম, মুখে লজ্জা ছিল বলে, ‘কপালে তো টিকলি পরবো না‘ আমি যার কথা ভাবছি মনে আনমনে’, ‘আমায় যদি ডাকো কাছে’, ‘কণ্ঠবীণা’, ‘মনে রেখো, স্মৃতি থাকে, যে দেশেতে শাপলা শালুক ঝিলের জলে ভাসে সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান। তিনি ‘অভিশাপ’ শিরোনামের একটি সিনেমায় কণ্ঠ দিয়েছিলেন।
‘কে তুমি এলে মোর জীবনে’ কথার গানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। আধুনিক ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি করছেন ছোটদের গান। জিনাত রেহানা স্মরণে চ্যানেল আই কার্যলয়ে শোক বই খোলা হয়েছে। আজ সকালে গান দিয়ে শুরুতে জিনাত রোহানার গাওয়া গান পরিবেশন করবেন সুমনা এবং চম্পা বনিক। তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করবেন সঙ্গীতজ্ঞ শেখ সাদী খান। তাঁর দুই সন্তান রেহনুমা কামাল ও রেহান কামাল।