• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

গ্রীষ্মের খরতাপেও সৌন্দর্য বিলাচ্ছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়


বেরোবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৩, ০৮:২৬ এএম
গ্রীষ্মের খরতাপেও সৌন্দর্য বিলাচ্ছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

গ্রীষ্মের খরতাপে শহুরে জীবন যখন অবসাদে বিপর্যস্ত, ঠিক তখনই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বস্তির সুবাতাস ছড়াচ্ছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া, হলুদ সোনালু, বেগুনি রঙা জারুল, রঙ্গন, কাঠগোলাপসহ নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল। গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দেওয়া এসব বাহারি ফুল শুধু দৃষ্টিকে প্রশান্তি দেয় না, মনকেও ভরিয়ে তোলে মুগ্ধতায়।

৭৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসটি ইতোমধ্যেই বৃক্ষ-জাদুঘর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে সারা দেশে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের  প্রচেষ্টায় প্রায় ৪০০ প্রজাতির ৩৮ হাজার গাছের সমারোহ এই ক্যাম্পাসে, যার মধ্যে রয়েছে কিছু দুর্লভ প্রজাতির গাছও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে রাস্তার দুইধারে সারি সারি কৃষ্ণচূড়াগাছ। বাতাসে দোল খাওয়া কৃষ্ণচূড়ার দিকে হঠাৎ চোখ পড়লে মনে হবে আকাশে যেন আগুনের ফুলকি। কিন্তু দৃষ্টি স্থির করলে স্পষ্ট হবে লালবর্ণের কৃষ্ণচূড়া। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিয়ে যেন বলছে আমরাই লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

ক্যাম্পাসের ভিসি রোডে এলেই দেখা মিলবে সোনালু ফুলের। গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে তার মধ্যে সোনালু উল্লেখযোগ্য। খরতাপে চলতি পথে খুব সহজেই পথিকের নজর কাড়ে এই ফুল। কিশোরীর কানের দুলের মতো বৈশাখী হাওয়ায় দুলতে থাকে হলুদ-সোনালি রঙের থোকা থোকা ফুল।

বিকেলের আড্ডায় স্বাধীনতা স্মারক কিংবা শহিদ মিনারে বসলেই পূর্ব দিকের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে চোখে পড়ে জারুলের বেগুনি আভা। গোধূলির আলোয় যেন এক মোহময় আবেশ সৃষ্টি করে এই জারুল। যেন বেদনাকে ছুঁয়ে দিয়ে আপন করে নেয় দর্শনার্থীদের। এর শুধু সৌন্দর্যই নয় আছে ভেষজ গুণও। জ্বর, বাতের ব্যথা, অনিদ্রা ও কাশি সারাতে জারুলের ব্যবহার বহু প্রাচীন।

ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার শান্তা বলেন, “দীর্ঘদিনের ছুটি শেষ করে ক্যাম্পাসে এসে মনে হচ্ছে আমাদের অভ্যর্থনা জানাতেই প্রকৃতির এই সাজ। ক্লাস শেষ করে হলে ফেরার সময় এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সত্যিই মুহূর্তে সব ক্লান্তি দূর করে দেয়।”

বিজয় সড়কে হাঁটলেই বড় বড় বৃক্ষের ছায়াতলে চোখে পড়বে রঙ্গন ফুলে। একপশলা বৃষ্টির পরে পুরো রাস্তায় স্বচ্ছ পানিতে প্রতিবিম্ব দেখা যায় রঙ্গনের। যা ক্যাম্পাসের এই অপরূপ সৌন্দর্যে যোগ করে আলাদা মাত্রা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাঠে গেলে দেখা যায় ছোট সাদা ঘাসফুলের। বাতাসে দোল খাওয়া সাদা ঘাসফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখলেই চোখ জুড়ে যায়। এ ছাড়া পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে দুর্লভ কিছু বিদেশি ফুলেরও দেখা মিলবে।

শহুরে যান্ত্রিক জীবন থেকে মুহূর্তেই যেন মনে অন্য রকম এক প্রশান্তির পরশ এনে দেয় ক্যাম্পাসের এসব ফুলের সৌন্দর্য। এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী ছুটে আসেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!