ঢাকার বকশীবাজারে বাসচাপায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাবা নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সহপাঠীরা মৌমিতা পরিবহনের ১০টি বাস আটক করেছে।
নিহত জহুরুল হক সেলিম (৫২) পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার বাসিন্দা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে মৌমিতা পরিবহনের দুটি বাস বকশীবাজারে যাত্রী তোলার সময় বেপরোয়াভাবে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হলে সেলিম দুই বাসের মাঝে চাপা পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সেলিম ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বড় ছেলে রিফাত বিন জহুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ছোট ছেলে জুবায়ের মাত্র ১৩ বছর বয়সী এবং প্রাণঘাতী ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। বাবার ঢাকায় আসার মূল উদ্দেশ্যই ছিল ছেলের চিকিৎসা। কিন্তু ট্র্যাজেডি ভিন্ন এক রূপে ধরা দিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান সায়েম বলেন, “রিফাতের বাবা চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। অথচ বাসের বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারালেন। এই পরিবারের দায়ভার এখন কে নেবে? আমরা এ ঘটনার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ চাই।”
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মৌমিতা পরিবহনের ১০টি বাস ক্যাম্পাসে এনে জব্দ করে রাখেন।
বাসগুলোর এক চালক আনোয়ার বলেন, “শিক্ষার্থীরা আমাদের ফোন ও চাবি নিয়ে নিলেও বিকেল ৫টার দিকে ফোনগুলো ফেরত দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা কোনো অর্থ দাবি করেনি।”
মৌমিতা পরিবহনের সাভার লাইনম্যান সুমন বলেন, “আমরা ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের এক শিক্ষার্থীর বাবা নিহত হয়েছেন। যদিও ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে, শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বাস মালিকদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ হয়নি, কীভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা যায়, তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।”