পিএইচডি গবেষণার অভিসন্দর্ভের (থিসিস) ৯৮ শতাংশ নকলের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি অনুষদের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপককে পদাবনতি (সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পতে) ও ডক্টরেট ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম (সিন্ডিকেট)।
অভিযুক্ত আবুল কালাম লুৎফুল কবীর ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (৩০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়টির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্বে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের দিকে ‘টিউবার কিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ: অ্যান এক্সপ্লোরেশন অব দিয়ার ইমপ্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ’ শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। তার এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আবু সারা শামসুর রউফ। সহতত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। সহতত্ত্বাবধায়ক একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনো কপি জমা দেননি বলে অভিযোগ ছিল লুৎফুল কবীরের বিরুদ্ধে।
২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আবুল কালাম লুৎফুল কবীরের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিন্ডিকেট সভায় ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি অভিযোগ তদন্তে কমিটি করে দেয় সিন্ডিকেট। ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর শাস্তি দিতে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
অভিযোগ এবং শাস্তির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরের সাথে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ভেবে-চিন্তেই নিয়েছে। তাছাড়া কাউকে চাকরি দেওয়ার, বরখাস্ত করার, ডিগ্রি দেওয়ার ও কেড়ে নেওয়ার অধিকার রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তাছাড়া এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই।”
এদিকে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, “পিএইচডি থিসিস জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় লুৎফুল কবীরের ডিগ্রি বাতিল এবং পদাবনতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”