• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ডাকবাক্স পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২২, ০৮:০০ এএম
ডাকবাক্স পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়

একসময় বন্ধু, স্বজন কিংবা পরিবারের সদস্যদের চিঠির অপেক্ষায় থাকতেন অনেকেই। এখন আধুনিক প্রযুক্তির ফলে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে চিঠির ব্যবহার। দাপ্তরিক কাজ ছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিঠির ব্যবহার আর হয় না বললেই চলে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আর কদর নেই ডাকবাক্সের। দেশের অন্যান্য জায়গার মতো ঘিওরসহ পুরো মানিকগঞ্জের অবস্থাও এমন।

চিঠি লেখার অভ্যাস কমতে থাকায় কাজে আসছে না রাস্তার ধারের ডাকবাক্সগুলোর। আগে দিনে দু-তিন বার ডাক বিভাগের কর্মীরা রাস্তার ধারের বাক্স থেকে চিঠি নিতে আসতেন। এখন সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে একবারে শূন্যের কোঠায়। খামে ভরা চিঠি এখন শুধু প্রাতিষ্ঠানিক।

আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডাক সেবা দিতে মানিকগঞ্জে ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে ই-পোস্ট সেন্টার সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়। সবগুলো সেন্টার পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগে। এই সেন্টারগুলো চালুর পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও বেশির ভাগ মানুষ জানেই না ই-পোস্ট সেন্টার কী।

ঘিওরের বানিয়াজুরী ইউনিয়ন ডাকঘরের পোস্টমাস্টার মো. শামীম বলেন, “এখন আর আগের মতো হাতে লেখা চিঠি আদান-প্রদান হয় না। বিশেষ করে বিদেশি চিঠির সংখ্যা খুবই কমে গেছে। তবে বর্তমানে জমির পরচা, সরকারি ডাক কিংবা ব্যাংক সংক্রান্ত কাগজ পত্র আদান-প্রদান হয়।”

বানিয়াজুরী এলাকার দিলীপ সাহা বলেন, “এ আধুনিক সমাজে মানুষ এখন প্রবাসী স্বজনদের সঙ্গে কিংবা প্রিয়জনের যোগাযোগের সুযোগটা যখন ইচ্ছে তখনই অনলাইনে উপভোগ করছেন। এখন তো ডাকঘর কিংবা ডাক বাক্সের এমন নাজুক অবস্থা হবেই।”

উপজেলার রাথুরা গ্রামের গৃহবধূ শেফালী বেগম বলেন, “আমার স্বামী ১৬ বছর ধরে প্রবাসে চাকরি করেন। প্রতি বছর একবার ছুটিতে আসেন। আগে একটি চিঠির জন্য অপেক্ষা করতাম তার খোঁজখবর জানার জন্য। পিয়নকে দেখলেই জিজ্ঞাসা করতাম, আমাদের চিঠি আছে নাকি? এখন মনে পড়লেই মোবাইলে ভিডিও কল দিয়ে সরাসরি কথা বলি। চিঠির কথা প্রায় ভুলেই গেছি।“

মানিকগঞ্জ প্রধান ডাকঘরের পোস্ট পরিদর্শক মো. নাইম খান বলেন, “কালের বিবর্তনে মানুষের অনেক পুরোনো অভ্যাস হারিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ—এসবের আড়ালে হাতে লেখা চিঠিপত্রও হারিয়ে গেছে। তবে ডাক বিভাগকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। পার্সেল আদান-প্রদান, মানি অর্ডার, সঞ্চয়পত্র, সরকারি ডকুমেন্ট, প্রাতিষ্ঠানিক কাগজপত্র, চাকরিসংক্রান্ত পরিষেবা লেনদেনে সীমিত জনবল নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখনো মানুষের আস্থার জায়গায় রয়েছে ডাক বিভাগ।”

নাইম খান জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডাক বিভাগ পরিষেবা চালু করেছে। যা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

Link copied!