• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

স্বামীকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করেন স্ত্রী ও প্রেমিক


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
স্বামীকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করেন স্ত্রী ও প্রেমিক
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নয়ন হত্যার পর ড্রামে গুম করার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ও তার মেয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করার পাশাপাশি বাকি জড়িতদের নাম ও লাশ গুমের পুরো ঘটনা তুলে ধরেছে সাবিনা।

পুলিশ জানায়, পরকীয়া প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে সাবিনা নয়নকে হত্যা করেন। এরপর ইয়াবা সেবন করে লাশ টুকরা টুকরা করে ড্রামে গুম করেন। এ ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজন আসামির নাম উঠে আসার পর তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের আদালত পুলিশের পরিদর্শক আতাউর রহমান। তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাতের আদালতে এই জবানবন্দি দেন সাবিনা ও তার মেয়ে।

সাবিনা ও নয়ন ফতুল্লার পাগলা দেলপাড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। হত্যার শিকার নয়ন তিন বছর ধরে মাদক মামলায় কারাগারে ছিলেন। এ সময় সাবিনার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেলের সঙ্গে। তাঁরা একসঙ্গে বসে ইয়াবা সেবন করতেন। জামিনে বেরিয়ে আসার পর নয়ন বিষয়টি জানতে পারে এবং এ নিয়ে দুজনের কয়েকবার ঝগড়া হয়।

৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় সাবিনার মোবাইলে রাসেল ফোন দেয়। বিষয়টি নয়ন দেখে ফেললে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে সাবিনাকে মারধর করে তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে নয়ন। মারধরের ক্ষিপ্ত হয়ে সাবিনা অন্য আরেকটি ফোন দিয়ে রাসেলকে বাসায় আসতে বলেন। রাসেল বাসার সামনে এলে নয়ন ও রাসেলের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।

একপর্যায়ে মধ্যে সাবিনা দুজনকে ফ্ল্যাটের একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে একটি স্টিলের লাঠি দিয়ে নয়নের মাথায় আঘাত করেন সাবিনা। এতে নয়ন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে রাসেল সুইচ গিয়ার দিয়ে শরীরে আঘাত করে নয়নের মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার সময় সাবিনার প্রথম ঘরের দুই মেয়ে পাশের রুমেই অবস্থান করছিল।

ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর মেয়েদের তাদের নানির বাসায় রেখে আসে সাবিনা। সারা রাত সাবিনা ও রাসেল রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে থাকে। পরদিন রাসেল তার বন্ধু চয়নের কাছে পুরো ঘটনা জানায় এবং সাহায্য চায়। এ সময় চয়ন তাকে লাশ গুমের পরামর্শ দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী হ্যাক্সো ব্লেড, স্কচটেপ কিনে আনেন।

এরপর ফ্ল্যাটে গিয়ে তিনজন মিলে লাশের পাশে বসে ১০-১৫টি ইয়াবা সেবন করে। এরপর হ্যাক্সো ব্লেড দিয়ে নয়নের দুই পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। শরীরের ওপরের অংশ ড্রামে ভরে এবং পা দুটো প্লাস্টিক দিয়ে পেঁচিয়ে তোশক দিয়ে ঢেকে রাখে। ড্রামভর্তি লাশ একটি অটোরিকশায় করে নিয়ে এসে শিয়াচর এলাকায় ফেলে যায়। আর পা দুটো চনয় ও তাঁর দুই সহযোগী নোমান ও সামির পিলকুনী প্রাইমারি স্কুলের পাশে ফেলে যায়।

Link copied!