কুড়িগ্রাম জেলা শহরের পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নামা ভেলাকোপা ও টাপু ভেলাকোপা গ্রামের মানুষদের দুর্ভোগের সীমা নেই। একদিকে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, অপর দিকে খাল পারাপারের জন্য নেই কোনো ব্রিজের ব্যবস্থা। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দুই গ্রামের হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। পারাপারের সুবিধার জন্য গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে তৈরি করেছেন এই সাঁকোটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পার হতে হচ্ছে খালের দুই দিকের গ্রামের বাসিন্দাদের। এছাড়া এই গ্রামে রয়েছে একটি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শতাধিক কোমলমতি শিশুদের জন্য এই নড়বড়ে সাঁকোটি এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেলিং বিহীন সাঁকোটিতে উঠতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে।
কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. আবু রায়হান বলেন, “আমার কলেজে যেতে এই নড়বড়ে সাঁকো পার হতে হয়। এতে খুব কষ্ট হয়। আমাদের গ্রামে ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ওপার থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতে আসে।”
ভেলাকোপা নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোর্শেদা বিথী বলেন, “আমরা তো ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাই। আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব চিন্তা হয়। ছোট বাচ্চারা বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনা হলে এ দায় কে নেবে। এখানে একটা ব্রিজ জরুরি হয়ে পড়েছে।”
নামা ভেলাকোপা গ্রামের বাসিন্দা মো. বরজাহান আলী বলেন, “আমরা গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এই বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। বন্যা, খরা সব সময় পারাপার হতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ি। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া দুষ্কর হয়ে যায়।”
ভেলাকোপা ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জমশেদ আলী টুংকু বলেন, “আমি অনেকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। ঢাকা থেকে টিম এসে পরিদর্শন করে গেছে। চেষ্টা করছি যাতে নামা ভেলাকোপা খালে দ্রুত একটা ব্রিজ হয়।”
কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, “নামা ভেলাকোপা ব্রিজের চাহিদার কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফান্ডের ব্যবস্থা হলে কাজ শুরু করা হবে।”