• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

ছেঁউড়িয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩, ০৩:৪৪ পিএম
ছেঁউড়িয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু

বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহর গান, বাউল মেলা ও সাধুসংঘের মধ্য দিয়ে শনিবার (৪ মার্চ) থেকে কুষ্টিয়া কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনী ও আলোচনা সভা শুরু হবে সন্ধ্যা থেকে।

ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি। ভক্ত অনুসারীরা আগে থেকেই লালন আখড়ায় জায়গা করে নিয়েছেন। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মাজার প্রাঙ্গণ ধুয়েমুছে সাফ করে এক বর্ণিল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষ।

মরমি এ সংগীত সাধকের বার্ষিক স্মরণোৎসব ও দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে তার সাধন-ভজনের তীর্থ স্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছে এখন উৎসবের পল্লিতে। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে আগমন ঘটেছে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনসহ অসংখ্য মানুষের। উৎসব শুরু ৪ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে স্মরণোৎসবে থাকবে লালনের স্মৃতিচারণা করে আলোচনা, লালন সংগীতানুষ্ঠান ও লালন গ্রামীণ মেলা।

কুষ্টিয়া শহরের কোল ঘেঁষে কুমারখালী উপজেলার কালীগঙ্গা নদী। এ নদীর তীরেই ছেউড়িয়ার লালন সমাধি। বাংলা ১২৯৭ সালের পয়লা কার্তিক ও ইংরেজি ১৭ অক্টোবর ১৮৯০ সালে এখানেই মরমি সাধক লালন শাহর শেষ শয্যা রচিত হয়।

গবেষকদের মতে, বাউল সাধক ফকির লালন শাহর জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে পালন করা হতো দোল উৎসব। আর দোল পূর্ণিমাকে ঘিরেই বসতো সাধু সংঘ। লালনের সেই স্মৃতির ধারাবাহিকতায় লালন একাডেমিও প্রতিবছর এ উৎসবটিকে ‘লালন স্মরণোৎসব’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে লালন অনুসারীরা দিনটিকে ‘দোল পূর্ণিমা’ উৎসব হিসাবেই পালন করে থাকেন।

সাধুদের মতে, সত্যিকার অর্থে লালন অনুসারীরা দোল পূর্ণিমার এ রাতটির জন্য সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। সাঁইজির রীতি অনুসারে দোল পূর্ণিমার রাতের বিকেলে অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টার দোলসঙ্গ শুরু হয়। চৈত্রের পূর্ণিমা রাতে জ্যোৎস্নার ছটায় আর মাতাল হাওয়ায় গানে গানে বাউল সাধকরা হারিয়ে যায় ভিন্ন কোনো জগতে। পরের দিন চারটায় ‘পুণ্যসেবা’ দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ করে আখড়াবাড়ি ত্যাগ করেন বেশির ভাগ সাধু। প্রকৃত সাধুসঙ্গের অধিবাস শেষ হলেও লালন একাডেমি আয়োজিত মূল মঞ্চে লালনগীতি ও লালনমেলা চলে আরও দুদিন। তারা মনে করেন, মানবধর্মই বড় ধর্ম। একসাথে এভাবে সাধুসঙ্গ করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

Link copied!