ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে ফিরোজ মোল্যা (১৮) নামের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামের নানা বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফিরোজ মোল্যা বোয়ালমারী সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ (১৮) ও তার ছোটভাই ফাহিম (১২) চাপলডাঙ্গা গ্রামে নানা বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করেছিল। শৈশবেই তাদের বাবা নিরুদ্দেশ হয়ে যান। মা ফিরোজা বেগম অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নানা-নানীর মৃত্যুর পর প্রতিবন্ধী এক মামাকে নিয়ে তারা নানাবাড়িতেই বসবাস করতো। ফিরোজ পড়ালেখার পাশাপাশি একটি বেসরকারি ক্লিনিকে দন্ত চিকিৎসকের সহযোগী ও কখনো কখনো নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতো।
বুধবার বিকেলে ফিরোজ নানা বাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করে। পরে বসতঘরের ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেয়। বিষয়টি পরিবারের লোকজন টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ফিরোজের কক্ষ থেকে একটি সুইসাইড উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে লেখা ছিল, “আমি জানি আমি কী করছি। জানি আবেগ দিয়ে জীবন চলে না। কিন্তু, আমার কাছে যে আমার স্বপ্নগুলো অনেক দামি ছিলো। হয়তো আমার জীবনের চেয়েও দামি। ... আমি ওকে ভালোবাসতাম। আমার আবেগমাখা কথাগুলো কারো বিবেকে লাগবে না, সেটা আমি জানি। ... আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।”
বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক মো. সরোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে বোয়ালমারী থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থল চাপলডাঙ্গা গ্রামের ফিরোজের বসতঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।