• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পরকীয়ার গোপন ছবি ও ভিডিও স্বামী দেখে ফেলায় আত্মহত্যা


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩, ০৯:৪২ পিএম
পরকীয়ার গোপন ছবি ও ভিডিও স্বামী দেখে ফেলায় আত্মহত্যা

পরকীয়ার গোপন ছবি ও ভিডিও স্বামী দেখে ফেলায় নুরুন্নাহার (৩৫) নামের এক নারী চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ ও তার সহযোগী জহুরুল তাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারীর পরিবার ও স্বজনরা।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পৌরসভার ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড় এলাকার লাবলুর রান্নাঘর থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নুরুন্নাহার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চর পৌলী গ্রামের বাসিন্দা ও একই এলাকার এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী।

পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ওই প্রবাসী তার মামাতো বোন নুরুন্নাহারকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে ১১ বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে। নুরুন্নাহার স্বামী বাড়িতে না থেকে ভূঞাপুরে ভাড়া বাসায় সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং তার ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। গত ১৬ জানুয়ারি তার স্বামী মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর জানতে পারেন, তার শ্যালিকার স্বামী জহুরুলের মাধ্যমে ঘাটাইল উপজেলার রুপের বয়ড়া গ্রামের মাসুদ নামে একজনের সঙ্গে তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। পরে বিষয়টি তিনি তার স্ত্রীকে জানালে স্ত্রী কোনো জবাব দেননি।

এ ঘটনার জেরে শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রবাসীকে ভূঞাপুরের গনেশ মোড় এলাকার নির্জন জায়গায় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ ও ভায়রা জহুরুল ডেকে নিয়ে স্ত্রীর সামনে তাকে মারধর করেন। এ সময় পরে এলাকায় না থাকার শর্তে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়টি স্ত্রীর ভাই মনিরুজ্জামানকে ফোনে জানালে ঘটনা জানতে পারে পরিবার। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে নুরুন্নাহার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগের রাতে নুরুন্নাহারের শিশু ছেলেটি তার নানা বাড়িতে ছিল।

নুরুন্নাহারের প্রবাসী স্বামী বলেন, “বিদেশ থেকে ফিরেই ভায়রা জহুরুলের মাধ্যমে জানতে পারি স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। পরে জহুরুল আমার স্ত্রী ও মাসুদের গভীর সর্ম্পকের ছবি ও ভিডিও দেখায়। জহুরুল আমার কাছে টাকা দাবি করে। বিষয়টি স্ত্রীকে জানালে সে কোনো জবাব দেয়নি। এরপর শুক্রবার রাতে মাসুদ ও জহুরুল মিলে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে আমাকে মারধর করে। সেখানে আমার স্ত্রীও উপস্থিত ছিল। পরে তাদের বিভিন্ন শর্তে রাজি হয়ে ভূঞাপুর থেকে পালিয়ে আসি। এরপর স্ত্রীর ভাইকে ফোনে বিস্তারিত বললে বিষয়টি পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়।”

তিনি আরও বলেন, “স্ত্রীকে বিদেশ থেকে সংসার ও ছেলের লেখাপড়ার খরচ বাবদ পাঠানো প্রায় ৫ লাখ টাকা মাসুদ বিভিন্ন কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া আরও ৫-৬ লাখ টাকা ঋণ করেছে স্ত্রী। এসবের জন্য মাসুদ ও জহুরুল দায়ী।”

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই প্রবাসী স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তার শরীর থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তবে এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ রয়েছে।”

Link copied!