• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার


নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে এ ঘটনায় মামলা করা হলে জেলা শহর মাইজদী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে, সোমবার রাত পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে চরকাজী মোখলেছ গ্রামে একটি নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত গোলাপের রহমানের ছেলে। তিনি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে হাতিয়া থেকে এসে চরকাজী মোখলেছ গ্রামে নতুন বাড়ি নির্মণ করেন এক দিনমজুর। স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ তিনি সেখানে বসবাস করছিলেন। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গা কাজ করতে গেলে ৩-৪ দিন পর বাড়ি ফিরে আসতেন ওই দিনমজুর।

গত দুই দিন আগে কাজের সন্ধানে তিনি বাড়ির বাইরে যান। এ সময় বাড়িতে তিন মেয়েকে নিয়ে ছিলেন ওই গৃহবধূ। রাত ২টার দিকে ঘরের সিঁধ কেটে ভেতরে ঢুকেন একজন। পরে তিনি ঘরের দরজা খুলে দিলে আরও দুজন ভেতরে প্রবেশ করেন। এদের মধ্যে দুজন পালাক্রমে ওই গৃহবধূকে এবং তার মেয়েকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে ওই গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে ঘরে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যান তারা।

গভীর রাতে শিশুদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে গৃহবধূর বাঁধন খুলে দেন এবং বিষয়টি চরজব্বার থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

নির্যাতিতার স্বামী জানান, মুন্সী মেম্বার কিছুদিন আগে তার স্ত্রীকে গ্রিল চিকেন খাওয়ানোর প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রলোভন দিতেন। তার স্ত্রী ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্সী মেম্বার তার মোবাইল ফোনের নম্বর সংগ্রহ করে উক্ত্যত করতেন। পরে মোবাইলে তার নম্বর ব্লক করে দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। 

এসব ঘটনার জের ধরে তারা এ ঘটনা ঘটায় বলে  নির্যাতিতার স্বামীর ধারণা।

এ ঘটনায় চরজব্বর থানায় মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন বলেন, মামলার প্রধান আসামি মুন্সী মেম্বারকে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন ধমন আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় আরও একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। গৃহবধূ ও তার মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে। 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের রাতে সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।আলোচিত ওই ঘটনার মামলার রায়ে  সোমবার ১০ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বার। আলোচিত মামলার রায়ের ২৪ ঘণ্টা না যেতেই একই উপজেলায় আরেকটি দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেল।

Link copied!