নওগাঁর মাঠে মাঠে আলুর বাম্পার ফলনের আশায় আলুচাষিরা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বৈরী আবহাওয়ার কবলে না পড়লে এবার আলুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন এবং স্বপ্ন বুনছেন জেলার কয়টি উপজেলার চাষি।
উৎপাদন ভালো হওয়ার পাশাপাশি ন্যায্য দামও পাওয়ার আশা তাদের। গত মৌসুমে আলুর ফলন ভালো হলেও কিছুটা দাম কম হওয়াতে ক্ষতির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি আলু স্টোর করে চরম লোকসান গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। আগের সব দুঃখ ভুলে এ বছরও আলু চাষ করেছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে উন্নত উপসি জাতের কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও অ্যারিস্টরি জাতের আলু চাষ করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় ষাইটা, লাল ও সাদা পাপড়ি আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর, সদরে ২ হাজার ৫২০ হেক্টর, বদলগাছি ৩ হাজার ১০ হেক্টর, রানীনগর ১ হাজার ৩৮ হেক্টর, আত্রাইয়ে ২ হাজার ৮০০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ১ হাজার ৩৬০ হেক্টর, পত্মীতলায় ১ হাজার ৮৭০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গত বছর ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করেন চাষিরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আলু ক্ষেতে ভাইরাস নেই বললেই চলে। তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি কৃষককে। যে কারণে বাম্পার ফলনে চাষিরা অনেকটা আশাবাদী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার নিয়ামতপুর, মান্দা ও আত্রাই উপজেলার মাঠজুড়ে যেদিকে চোখ যাবে সেদিকে শুধু দেখা যাবে আলুক্ষেত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছেন। তবে ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলনের সময় কাঙিক্ষত দাম পাবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন চাষিরা।
নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুর ইউনিয়নের ছাতমা গ্রামের রুবেল হোসেন বলেন, “এ বছর ৩০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ক্ষেতের লক্ষণ দেখে ভালো মনে হচ্ছে। আর কিছুদিন গেলেই এসব জমি থেকে আলু তোলা হবে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের কিছু কিছু জমির আলু বাজারে তোলা হয়েছে। দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এখন বাজারে আলুর দাম ভালো থাকলেও সামনে আলু তোলার উপযুক্ত সময়ে দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে আমরা আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলার কোল্ডস্টোরেজগুলোতে যোগাযোগ করছি। কিন্তু সেখানে ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই বুকিং দেওয়ায় আমাদের মতো ছোট চাষিদের তেমন সুযোগ থাকছে না।”
মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের আইওরপাড়া গ্রামের আলুচাষি নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি ছয় বিঘা জমিতে চাষ করেছি। সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এ বছর বেড়েছে সার, কীটনাশকের ও শ্রমের খরচ।”
জেলার কৃষি উপপরিচালক আবুল হোসেন বলেন, “এ বছর আলুর ক্ষেতকে রোগবালাইমুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছে কৃষি বিভাগ। জেলার কোথাও আলুর ফলন বিপর্যয় হয়নি। আশা করা যাচ্ছে সামনে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে আলুর বাম্পার ফলন হবে।”
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    



































