দুই মাসে বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেড নামে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
সোমবার (২ জুন) সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এসময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, রোববার (১ জুন) কারখানার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ তা করতে ব্যর্থ হয়। পরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সোমবার সকালে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিকরা জানান, এর আগে কর্তৃপক্ষ গত ১৭ মে এক নোটিশে কারখানাটি পরদিন ১৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত লে-অফ ঘোষণা করে। এছাড়া ওই নোটিশে শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন ২৫ মে পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়।
পরবর্তীতে ২৫ মে দুপুরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন নিতে কারখানায় উপস্থিত হলেও মালিকপক্ষ সেদিন শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা সেদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কারখানা সংলগ্ন হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ ২৯ তারিখে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানায়। কিন্তু ২৯ তারিখেও মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। পরে ১ জুন শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক শ্রমিক বলেন, “এপ্রিল ও মে মাসের বেতন পাব। কারখানার মালিক বারবার বেতনের তারিখ দিলেও বেতন পরিশোধ করছে না। আজ বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে, লাঠিচার্জ করে পানি ছিটিয়ে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। অনেকে হাত-পায়ে আঘাত পেয়েছে।”
আরেকজন শ্রমিক বলেন, “মালিকপক্ষ আমাদের দুই মাসের বকেয়া বেতন দিচ্ছে না। সেনাবাহিনী কয়েকবার মালিককে কারখানায় এনে বেতন দেওয়ার তারিখ জানিয়েছিল। কিন্তু ওই তারিখেও বেতন দেয়নি। সামনে ঈদ, বেতন-বোনাস না পেলে বাড়ি যাব কীভাবে?”
এ বিষয়ে জানতে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হয়। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।