চলতি মৌসুমের শুরু থেকে নাটোরে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। তাই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ বছর জেলার বাগানগুলোতে খুব দ্রুত আম পাকতে শুরু করে। এতে বিপাকে পড়েছেন বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা। আশানুরূপ দামের চেয়ে কম মূল্যে আম বিক্রি করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আড়তগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আম আসছে। তবে পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও ক্রেতা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। যারাও আছেন আশানুরূপ দাম বলছেন না।
রহিম মোল্যা নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে বাহারি জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে। গরমের কারণে দ্রুত আম পেকে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কেউ দাম বলছে না। প্রকারভেদে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই আম।
জেলার লালপুরের আম ব্যবসায়ী আহম্মেদ আলী বলেন, “এ বছর বাগান কিনেছি তিনটি। আশা ছিল মুনাফা হবে কিন্তু অতিরিক্ত গরমের কারণে আম আগেই পেকে যাচ্ছে ফলে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না।”
নাটোর সদরের বাগানমালিক রবিউল করিম বলেন, “বৃষ্টি না থাকায় পাম্প বসিয়ে বাগানে পানি দিয়েছি। ফলে আমের ফলনও ভালো ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত গরমের কারণে সময়ের আগেই আম পেকে যাচ্ছে। এখন পাইকারি বাজারে ন্যায্যদাম থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।”
নাটোর জেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস জানিয়েছে, সাধারণত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে গোপালভোগ এবং শেষ দিকে লক্ষ্মণভোগ ও রাণী পছন্দ পাকার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত গরমের কারণে এসব আম মাসের শুরুতেই পেকে যাওয়ায় বাজারে আসতে শুরু করে। এ ছাড়া ক্ষীরশাপাতি, ল্যাংড়া, মোহনভোগ ও আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা ও ফজলি, মল্লিকা, আশ্বিনা জাতের আম জুলাইয়ের শুরু থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বাজারে আসার কথা থাকলেও এখনই এসব আম পেকে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক সূত্র থেকে জানা যায়, গত ১৫ মে থেকে স্থানীয় গুটি জাতের আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে নাটোরে এ বছরের আম সংগ্রহ শুরু হয়। ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে লক্ষ্মণভোগ ও রাণী পছন্দ, ৩০ মে থেকে ক্ষীরশাপাতি, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া, ২০ জুন থেকে মোহনভোগ ও আম্রপালি, ২৫ জুন থেকে হাড়িভাঙ্গা ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে মল্লিকা, ১০ জুলাই থেকে বারি-৪, ২০ জুলাই থেকে আশ্বিনা জাতের আম এবং সর্বশেষ ২০ আগস্ট থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।