• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

কুড়িগ্রামে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
কুড়িগ্রামে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য

গত কয়েক মাস ধরে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা শান্তির শহর খ্যাত কুড়িগ্রামে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য। ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, গ্রুপিংসহ দিন দিন নানান অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তারা। অধিকাংশ কিশোর মাদকে আসক্ত হওয়ায় এদের নিয়ে অনেক অভিভাবকও চিন্তিত। আর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বেপরোয়া আধিপত্যের কাছে সাধারণ মানুষ এখন প্রায় জিম্মি। অস্ত্রের ভয়ে কিছুই বলতে পারছেন না স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাঁঠালবাড়ি বাজারের স্থানীয় এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, “কিছু দিন আগে ঈদের সেলামি হিসেবে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আমার মতো এখানকার আরও ব্যবসায়ীরা চাঁদা দিয়েছেন। তাদের কাছে অস্ত্র থাকায় আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারি না।”

কাঁচামালের ব্যবসায়ী বলেন, “রাত ৯টার পরে আমরা ভয়ে ভয়ে ব্যবসা করি। তাদের কিছু বলার মতো সাহস নাই। গত বছরে এখানে এসব নিয়ে রক্তারক্তি ঘটনা ঘটে। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবার এদের উৎপাত শুরু হয়েছে।”

কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, “কলেজ ছুটি হলেই দেখি স্টেডিয়ামের সামনে, রাস্তার মোড়ে বাইক নিয়ে একদল তরুণ দাঁড়িয়ে থাকে। আমাদের দেখে হাসাহাসি করে, গান গায়, যা খুবই বিরক্তিকর।”

সম্প্রতি কাঁঠালবাড়ি বাজার এলাকায় চাঁদা না দেওয়ার কারণে সরকারি টিসিবি পণ্য বিতরণে বাঁধা দেয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এর প্রতিবাদ করায় কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের আধ গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. আমির উদ্দিনকে প্রাণ-নাশের হুমকি দেয় তারা।

এ ঘটনায় গত ২৬ মার্চ কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর সত্যতা যাচাই করে ১৭ দিন পর ১৩ এপ্রিল অভিযোগপত্রটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। তবে এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে সেই মামলার অভিযুক্তরা।

মুক্তিযোদ্ধা আমীর উদ্দিন বলেন, “দুই ভাই একসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, এক ভাই শহীদ হয়েছেন। রক্ত দিয়ে স্বাধীন করা বাংলাদেশে আজ আমি ব্যবসা করতে পারছি না। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।”

এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমীন বলেন, “কুড়িগ্রামে কিশোর অপরাধ প্রবণতা তেমন নেই। মাঝে-মধ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে ও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আরও নিরাপত্তা ও টহল বাড়াব। কাঁঠালবাড়ির ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।”

Link copied!