ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনে হাজারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। সমুদ্রের নোনা জলে নেচে গেয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছে পর্যটকরা। তবে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে ভ্রমণ পিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের একটু ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসেন সুর্যদয় ও সুর্যস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার কারণে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে সাগর কন্যা কুায়াকাটা। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে সজ্জিত সাগর কন্যাকে উপভোগ করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, সৈকতের জিরো পয়েন্ট, শুঁটকি পল্লি, গঙ্গামতির সৈকত, রাখাইন নারী মার্কেট, রাখাইন পল্লি, জাতীয় উদ্যান, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন, সৈকতের ঝাউবাগানসহ পর্যটন স্পটগুলোতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক অবস্থান করছেন। তারা সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ে ভিজে উল্লাসে মেতেছেন। বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছেন অনেকে। কেউ কেউ সৈকতের বেঞ্চে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। বিক্রি বেড়েছে সব পর্যটন স্পটগুলোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস তৎপর রয়েছে।
কুয়াকাটা ঘুরতে আসা পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, “পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় ঘুরতে এসেছি। সকাল থেকে পুরো সৈকত পর্যটকে মুখর। অনেক লোক এসেছে, বেশ ভালো লাগছে। তবে প্রচণ্ড গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।”
মাদারীপুর থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা এসেছেন মোসলেম উদ্দীন। তিনি বলেন, “আমার পরিবার নিয়ে সকালে কুয়াকাটা এসেছি। এখানে ৪ দিন থাকব। পহেলা বৈশাখের শেষ সূর্য অস্ত এবং বছরের প্রথম সূর্যোদয় উপভোগ করব কুয়াকাটা বসে। এখানে একই জায়গা বসে সূর্যোদয় এবং সূর্য অস্ত দেখা যায়। তাই কোথাও না গিয়ে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা এসেছি।”
এদিকে এবার ঈদের ছুটিতে পর্যটকের চাপের কারণে কুয়াকাটার হোটেলগুলো আগেভাগেই ভাড়া হয়ে গেছে। এতে অগ্রিম বুকিং না করায় বিপাকে পড়েছেন অনেক পর্যটক।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হিমেল বলেন, “আজ অনেক পর্যটক আসতে শুরু করেছে। আমরা বুকিং করে না এসে সমস্যায় পড়েছি। হোটেলে রুম পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে।”

আবাসিক হোটেল সি ভিউয়ের ম্যানেজার সোলায়মান ফরাজী বলেন, “আজ পর্যটকের সংখ্যা অনেক। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এবারের ঈদের ছুটিতে আমাদের শতভাগ রুম বুকিং হয়েছে। আশা করছি সামনের পুরো সপ্তাহ ভালো পর্যটক পাব।”
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, “ঈদের ছুটি উপলক্ষে আজ কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক এসেছেন। প্রচণ্ড গরমেও পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর গোটা সৈকত।”
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি পর্যটন স্পটে সাদা পোশাকে পুলিশ সার্বক্ষণিক ডিউটিতে আছে। এখানে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে আসা পর্যটকরা যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি।”
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, “আজ কুয়াকাটা পর্যটকে মুখর। কাল-পরশু কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল নামবে। তাদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলাপাড়া থানা, মহিপুর থানা, কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত আছে।”
                
              
																
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    




































