একসময় দেশের অর্থনীতির বড় চালিকা শক্তি ছিল পাট। পরবর্তী সময়ে নানা কারণে পাটের সুদিন হারিয়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সোনালি আঁশখ্যাত পাটের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায়। এ জেলায় এবার পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে, লাভবান হয়েছে চাষিরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দশক আগের মতো বর্তমানেও পাটের চাহিদা বেড়েছে। বিশেষ করে পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়েছেন। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতার সমস্যা কিছুটা নিরসন হওয়ায় পাট চাষে তেমন কোনো বাধা নেই। বেশ কয়েক বছর আগে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষ একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এখন তারা পাট চাষ ও বিক্রি করে ভালো মূল্য পাচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলাতে ১১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ১২ বেল। এর বিপরীতে চলতি বছর জেলায় ১১ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াও ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে পাট আবাদ করা সম্ভব হয়েছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে সাতক্ষীরায় প্রতি বিঘা জমিতে সাড়ে ১১ মণ পাট উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয় সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিমণ পাট তারা ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন, যা মোটামুটি লাভজনক। পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করা হয়, যা কৃষকের উদ্বৃত্ত লাভ হিসাবে থাকে।
সদর উপজেলার মহাদেবনগর গ্রামের পাটচাষি গোলাম মোস্তফা জানান, তিন-চার বছর ধরে পাট চাষ করে অনেক লোকসান হয় তার। কিন্তু গত বছর যে পাট লাগিয়েছিলেন, তা থেকে তিনি ভালোই লাভবান হয়েছেন।
একই এলাকার পাটচাষি মো. আসাদুল ইসলাম জানান, ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছিলেন তিনি। পাটক্ষেতের আগাছা দূর করা এবং পাট পানিতে পচিয়ে শুকানো পর্যন্ত সব খরচ বাদ দিয়ে ৮০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে তার।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “পাটের আবাদ বৃদ্ধি করতে সরকার বীজ, সারসহ বিভিন্ন সুবিধা কৃষকদের দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিকসময়ে জলাবদ্ধতার সমস্যাও কিছুটা দূর হয়েছে। এখন থেকে কৃষকরা নির্বিঘ্নে পাট চাষ করতে পারবেন। কৃষি বিভাগ সর্বদা তাদের পাট চাষে করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছে, যা পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।”
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































