বিতর্কিত গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল আবারও আইনি জটিলতায়। ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ। যদিও নোবেলের আইনজীবীর দাবি, বাদীকে বিয়ে করে বর্তমানে সংসার করছেন এই গায়ক।
গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চার্জশিট ও পরবর্তী কার্যক্রম আদালত সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হবে। তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছিলেন, তবে তাদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতে তাদের তথ্য পাওয়া গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
এদিকে নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, ধর্ষণের মামলার বাদীকে নোবেল বিয়ে করেছেন। বর্তমানে তারা সংসারও করছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন, তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে এবং নোবেল খালাস পাবেন।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন নোবেল। বিয়ের শর্তেই তিনি জামিন পেয়েছিলেন।
মামলার প্রেক্ষাপট ও লোমহর্ষক নির্যাতন মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান নোবেল। সেখানে তাকে আটকে রেখে মোবাইল ও টাকা কেড়ে নেওয়া হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নোবেল তাকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ভিডিও ধারণ করে রাখেন। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইল করা হয়। প্রায় ছয় মাস ধরে তাকে আটকে রেখে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর করতেন নোবেল। চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নির্যাতন করতে তাকে ২-৩ জন সহায়তা করত বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে ওই ছাত্রীর পরিবারের সহায়তায় গত ১৯ মে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।


































