ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়নে বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই কর্মসূচির ফলে মেট্রোরেলের সব যাত্রীসেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মচারীরা জানান, ২০১৩ সালে ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ এক যুগ অতিবাহিত হলেও প্রতিষ্ঠানের ৯০০-এর বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি-বিধিমালা এখনও প্রণীত হয়নি। এর ফলে ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট ভাতা-ওভারটাইম, গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা এবং পদোন্নতির সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে চাকরি-বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীকালে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কর্মচারীরা আন্দোলনে নামলে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ ২০ মার্চের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রণয়নের আশ্বাস দেয়। কিন্তু ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি।
কর্মচারীদের দাবি, সার্ভিস রুলের সব ধারা নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সম্মতি থাকলেও প্রকল্পের জনবলকে কোম্পানিতে আত্মীকরণের উদ্দেশ্যে সংযোজিত একাদশ অধ্যায়ের “বিশেষ বিধান” সরকারি বিধি-বিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এটি পাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
১০ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্মচারীদের সঙ্গে সভায় জানান, বিশেষ বিধান বাদ না দেওয়া পর্যন্ত সার্ভিস রুল অনুমোদন সম্ভব নয়। তিনি সার্ভিস রুল প্রণয়নের কোনও সময়সীমাও দিতে পারেননি।
কর্মচারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রকাশ না করলে ১২ ডিসেম্বর ভোর থেকে তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন এবং মেট্রোরেলের যাত্রীসেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
কর্মচারীরা দাবি করেন, কর্তৃপক্ষের অযৌক্তিক বিলম্ব এবং বিতর্কিত বিশেষ বিধান বজায় রাখার কারণে তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কর্মসূচির ফলে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে, তার সম্পূর্ণ দায়ভার ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।


































