শিশু সাজিদকে উদ্ধারের কাজ দেখতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রুনা খাতুন। বিলাপ করতে করতে তিনি বলেন, আল্লাহ, আমার ছাওয়ালের মরা মুখটাও দেখালা না রে। আল্লাহ, আমার ছাওয়াল শ্যাস (শেষ)। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে কয়েকজন প্রতিবেশীর কাঁধে ভর দিয়ে তিনি খননের জায়গায় আসেন। সেখানে এসে তিনি আহাজারিতে ভেঙে পড়েন।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বারবার বলেন, আল্লাহ, আমার ছাওয়াল শ্যাস রে আল্লাহ। আমার ছাওয়াল শ্যাসরে আল্লাহ। আল্লাহ, আমার ছাওয়ালকে ফিরায়া দাও। আল্লাহ আমার ছাওয়ালের মরা মুখটাও দেখতে পানু ন্যা। আল্লাহ আমার ছাওয়ালের মরা মুখটাও দেখালা না রে। আল্লাহ, আমার ছাওয়াল শ্যাস।
দুই বছর বয়সী সাজিদকে উদ্ধারে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি উদ্ধার তৎপরতায় সবার সহযোগিতা চান এবং উদ্ধারকর্মী ছাড়া অন্য সবাইকে দূরে থাকার অনুরোধ জানান।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ২৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু সাজিদ ওই গ্রামের রাকিব উদ্দীনের ছেলে। ৩টি এস্কেভেটর দিয়ে খননকাজ শেষ করার পর খনন করা বড় গর্ত থেকে সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করে শিশুটি যে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে গেছে, সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু পানি ও কাদা জমে থাকায় তারা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে শিশুটি গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায়। এরপর গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ৩০ ফুট গভীর গর্তে ক্যামেরা নামান। কিন্তু ওপর থেকে পড়া মাটি ও খড়ের কারণে শিশুটিকে দেখা যায়নি। তবে একই দিন দুপুরে শিশুটির কান্নার শব্দ শোনা যায়। তবে থেমে থাকেনি ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাইজুল ইসলাম বলেন, মাটি থেকে ৪২ ফুট গভীরেও শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে উদ্ধারে খনন ছাড়া উপায় নেই। তাই বড় পরিসরে খোঁড়া হচ্ছে। শিশুটিকে উদ্ধারে আরও সময় লাগবে।





































