রাজশাহীর তানোর উপজেলায় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে রাত পেরিয়ে সকাল হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় ২১ ঘণ্টা পার হলেও তার নড়াচড়ার কোনো আলামত পায়নি ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয়রাও কাটিয়েছেন নির্ঘুম রাত।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাজিদ ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের যে গর্তে পড়ে গেছে তার পাশে বড় গর্ত খুঁড়ে সেখান থেকে সুড়ঙ্গ পথে তার কাছাকাছি যাওয়া হয়েছে। তবে সেখানেও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি তার। এখনো বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা চলছে শিশুটিকে সেখান থেকে উদ্ধারের।
শিশুটির অবস্থান শনাক্তে সেই গর্তে ফায়ার সার্ভিস ফেলেছিল বিশেষ ক্যামেরা। কিন্তু ৩৫ ফুট যাওয়ার পর আটকে যায় ক্যামেরা। তবে দেখা মেলেনি সাজিদের। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা-হয়তো ৪০ ফুট নিচেই রয়েছে স্বাধীন। অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় ফায়ার সার্ভিস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর পাইপের ভেতর থেকে শিশুটির সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। তবে দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় শিশুটি এখনও বেঁচে আছে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরপরই উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস। সাজিদ ওই এলাকার রাকিবের ছেলে।
স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশে খেলছিল সাজিদ। সেখানে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) অধীনে পরীক্ষামূলকভাবে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের পর সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। খেলার একপর্যায়ে শিশুটি ওই অরক্ষিত বোরিং পাইপের ভেতরে পড়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, বোরিং মালিক তাহের ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত এই ডিপের পাইপটি মুখ খোলা অবস্থায় ফেলে রেখেছিলেন। কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনাস্থলে শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় করেছেন এবং শিশুটিকে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছেন।






































