মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে মাস্ক নিয়ে পথে পথে বিক্রি করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। বিক্রিত অর্থেই চলছে পরিবারের ভরণ-পোষণ।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর শহরের জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়কে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের গেটের সামনে আট-দশজন শিশু শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে মাস্ক বিক্রি করছে। এদের কারো বয়স ৬ আবার কারো ৯ বছর। সারাদিন যেটুকু আয় করে তাই নিয়ে সংসার চলে তাদের। শুধুমাত্র শুক্রবার ব্যতিত অন্যান্য দিন তাদের হাঁকডাকে মুখরিত থাকে জেনারেল হাসপাতাল এলাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে যে সমস্ত বাচ্চারা মাস্ক বিক্রি করে। তারা বেশিরভাগই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থী। কিন্তু পরিবারের অভাবের কারণে পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই এই কাজ করছে।
মাস্ক বিক্রেতা সুমন জানায়, তার বাড়ি শহরের আলীপুর এলাকায়। বাবা মান্নান পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। বাবার আয়ে সংসার চলে। গত দেড় বছর ধরে করোনার প্রভাবে দেশব্যাপী সকল কার্যক্রম স্থগিত করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন সুমনের বাবা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে পুরো পরিবার। সারাদিনে একমুঠো খাবারের জন্য দিশেহারা সকলে।
মাস্ক বিক্রি করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনটি মাস্ক বিক্রি হয় ১০ টাকায়, ৬টি মাস্ক বিক্রি হয় ২০ টাকায়। এই টাকা দিয়ে চলছে তাদের সংসার। তাদের আশাবাদ, সরকার যদি তাদের সামান্য সহযোগিতা করত তাহলে তাদের পরিবার নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে থাকতে পারতো। প্রতিদিনের বেচাকেনা সমান থাকে না। ফলে দুঃখ-কষ্টে দিনযাপন করছে এ সকল শিক্ষার্থীর পরিবার।
ফরিদপুর সদরের ইউএনও মো. মাসুদুল আলম বলেন, “করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতার পাশাপাশি সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর লোকজনের জন্য প্রচুর ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এ থেকে ফরিদপুর সদর উপজেলার কোনো দরিদ্র মানুষ বাদ যাবে না। তাই ওই শিশুদের পরিবারকে সহযোগিতা করতে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।”