করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেই রোববার (১ আগস্ট) থেকে রপ্তানিমুখী সকল শিল্প-কারখানা খোলার ঘোষণায় কর্মস্থলে ফিরতে শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বেড়েছে ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে।
আজ সকাল থেকে এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় ঢাকামুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
রাস্তায় যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই বললেই চলে। আজ সকাল থেকেই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে কর্মস্থলে ফেরা শ্রমিকদের আনাগোনা বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি। মেঘলা আকাশ ক্ষণেক্ষণে বৃষ্টি এইসব দুর্যোগের মধ্যেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে রাস্তায়।
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা ছোট ছোট যানবাহনে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তারা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজি ও ভ্যানগাড়িতে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা চলাচল করছেন। শ্রমিকদের অতিরিক্ত চাপে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। নিমতলা, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর লিং রোড এলাকায় ব্যাপক দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছেন ঢাকাগামীরা।
এদিকে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ভেঙে ভেঙে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন যাত্রীরা। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্রা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় করে ঢাকা যাচ্ছেন বলে জানান ঢাকামুখী যাত্রীরা।
তারা জানিয়েছেন, আগামীকাল থেকে তাদের কারখানা খুলছে। এ জন্য ভোগান্তি সত্ত্বেও ঢাকায় আসছেন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ভেঙে ভেঙে আসতে হচ্ছে তাদের। একইসঙ্গে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
ফরিদপুর থেকে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক আরিফুল জানান, রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটির পর কারখানা খুলে দেওয়ায় তাদের বিপদে পড়তে হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখে হঠাৎ কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। গণপরিবহন খুলে দিয়ে কারখানা খোলা উচিত ছিল। তাহলে এ রকম দুর্ভোগ পোহাতে হতো না তাদের।
সিরাজদিখান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, কলকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় সড়কে কর্মস্থলে ফেরা শ্রমিকদের চাপ বেড়েছে।
হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, দক্ষিণ অঞ্চল থেকে যারা ঢাকামুখী আসছেন তারা ঢাকায় মূলত পায়ে হেঁটেই যাচ্ছেন। কোনো প্রকার গণপরিবহন চলাচল করছে না।
করোনার সংক্রমণ রোধে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ বিধিনিষেধ চলবে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ আছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিল্প-কারখানা।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা আরোপিত বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখা হলো।