• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

যে গ্রামে কথা হয় সাংকেতিক ভাষায়!


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম
যে গ্রামে কথা হয় সাংকেতিক ভাষায়!

শহুরের চেয়ে গ্রামে বসবাস করা মানুষদের মধ্যে সম্পর্ক বেশি দৃঢ় হয়। প্রায় প্রত্যেকেই প্রত্যেককে চেনে। দু:খে, সুখে পাশে থাকে। মুখের ভাষায় প্রকাশ পায় তাদের অনুভূতিগুলো। জমে উঠে তাদের হাসি-কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত।

মুখের ভাষায় এসব ভাব বিনিময় করা সহজ হয়। কিন্তু বিশ্বে এমনও গ্রাম রয়েছে, যেখানে মুখের ভাষার পরিবর্তে ব্যবহার হয় সাংকেতিক ভাষার। গ্রামের বাসিন্দারা পরস্পরের সঙ্গে সাংকেতিক ভাষাতেই ভাব বিনিময় করে। যাকে বলা হয় ‘কাতা কোলক’।

বিষ্ময়কর এই গ্রামটি অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের উত্তরে। যার নাম বেংকালা। পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামটি। যার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে জুড়িয়ে যাবে মন-প্রাণ। প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস এই গ্রামে। অধিকাংশ বাসিন্দাই এখানে দারিদ্র।

গ্রামটির পরিচিতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। কারণ এই গ্রামের বাসিন্দারা নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেন ইশারায়। সাংকেতিক ভাষায়। কারণ গ্রামের বাসিন্দাদের প্রায় সবাই বধি। তারা একে অন্যের মুখের ভাষা শুনতে পান না। তাই কথা বলার একমাত্র মাধ্যম সাংকেতিক ভাষা। বিশ্বে অনেক মানুষই এই গ্রামকে  বধিরদের গ্রাম বা ‘The Village Of Deaf’ বলেই চেনেন।

এই গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে গবেষণাও করেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানান, এই গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দাই এক বিরল জিনগত ত্রুটির শিকার। এটি একটি বিশেষ জিনগত ত্রুটি। যা ডিএফএনবি৩ বা DFNB3 নামে চিহ্নিত করা হয়। এই ত্রুটির কারণে শ্রবনশক্তি কম হয় বা বধি হয়। তাই বেংকালা গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই বধি হয়ে জন্ম নেন।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে জানা যায়, গ্রামটির বাসিন্দরা প্রধান জীবিকা নির্বাহ করেন জমি চাষ করে এবং পশুপালন করে। তাছাড়া পর্যটন থেকেও তাদের আংশিক উপার্জন রয়েছে। 

গ্রামটির সব বাসিন্দা বধি নন। তবে অধিকাংশই বধি। তাই তারা ‘কাতা কোলক’ভাষায় কথা বলে। যা এখন গ্রামটির ঐতিহ্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের বাসিন্দারা আধুনিকতাও শিখছেন। আয়ত্ত করছেন আন্তর্জাতিক সাংকেতিক ভাষাও।

গ্রামের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবছরই পর্যটকরা সেখানে ভিড় করে। গ্রামের বাসিন্দারাও ইশারায় কথা বলেন পর্যটকদের সঙ্গে। এই গ্রামে আসা পর্যটকদের মূল আকর্ষণ হলো ‘জাঞ্জের কোলক’ বা বধিরদের নৃত্য।

Link copied!