• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

নিয়তি কি ব্রাজিলকে নিয়েও খেলবে


অঘোর মন্ডল
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২, ০৯:২০ এএম
নিয়তি কি ব্রাজিলকে নিয়েও খেলবে

মঙ্গলবার আর্জেন্টিনা, বুধবার জার্মানি, তাহলে বৃহস্পতিবার কি ব্রাজিল? না, সার্বিয়া ম্যাচের আগে এই পূর্বাভাস লেখার ঝুঁকি না নেওয়া ভালো। কারণ, বিশ্বকাপের ইতিহাসের সফলতম দল ব্রাজিল। পাঁচ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন পেলের দেশ।

পেলে। নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান। ব্রাজিল এক ফুটবল তীর্থের নাম। সেই তীর্থ দর্শনে না গিয়ে বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী বিশ্বকাপ এলে মন্ত্রের মতো জপতে থাকেন—ব্রাজিল, ব্রাজিল ব্রাজিল! কাতারে সেই দলটা মাঠে নামার সময় একটাই আওয়াজ উঠবে—ব্রা-জি-ল, ব্রা-জি-ল, ব্রা-জি-ল।

এই বঙ্গদেশে বাঙালিদের বড় একটা অংশ হৃদয় উজাড় করে দিয়ে ব্রাজিলীয় আবেগে ভাসবেন। তাদের কাছে ব্রাজিল হচ্ছে বিশ্বকাপের হৃৎপিণ্ড! বিশ্বকাপের হৃদযন্ত্রে কান পাতলে তারা নাকি একটা আওয়াজই শুনতে পান—ব্রাজিল! ব্রাজিল! সার্বিয়ার মতো দেশ সেই  হৃৎস্পন্দন থামাতে পারবে, বিশ্বাস হয় না।

কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে যে একের পর এক অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটছে। সৌদির কাছে মুখ থুবড়ে পড়ল আর্জেন্টিনা। জাপানিরা টপকে গেল বার্লিন প্রাচীর। বিধ্বস্ত হলো চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সার্বিয়ানরা যদি থামিয়ে দেয় হলুদ-সবুজের সাম্বা নাচ, তা হলে কাতার বিশ্বকাপের নকআউটের আগে শুরু হবে অন্তহীন গবেষণা।

ইতিহাস আর কৌলীন্য মোড়ানো এক দল ব্রাজিল। পেলে-গারিঞ্চা-রোনালডো-রিভালদো-রোনালদিনহো-কাকাদের উত্তরসূরি হিসেবে মাঠে নামবেন নেইমাররা। দুই দশকের সাফল্য খরা কাটাতে মরিয়া তারা। কোচ তিতের এই দলটার বড় ভরসা নেইমার। তার স্কিল আর বুদ্ধিদীপ্ত চাতুরীর নিদর্শন ফুটবল দুনিয়াকে মুগ্ধ করে। অন্যদের গতি আর সৃষ্টিশীলতা সেলেসাওদের বড় ভরসা। ব্রাজিলয়ান ফুটবল জৌলুশে দগ্ধ হতে পারে সার্বিয়া।

আর সার্বিয়াকে পুড়তে দেখে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকরা ২০ বছরের ব্যর্থতা ভুলতে কোরাস গেয়ে উঠতে পারে, ‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো, আগুন জ্বালো।’

আগুন জ্বালানোর মতো বারুদ আছে পেলের দেশে। সঙ্গে গ্যালারিতে হলুদ-সবুজের শর্ষেক্ষেত। যেখান থেকে ব্রাজিল-ব্রাজিল শব্দাস্ত্রের আওয়াজ। পারস্য সাগরপাড় তখন মনে হতেই পারে কোপাবানা বিচ! আবার সার্বিয়ানরা যদি উচ্চাশার মগডালে উঠে পড়েন, তাহলে শোকগ্রস্ত হয়ে পড়বেন ব্রাজিল সমর্থকরা। আর্জেন্টিনা, জার্মান সমর্থকদের মতো বলতে হতে পারে, ফুটবল যতটা রোমাঞ্চ ছড়ায়, ততটা হতাশায়ও ডোবায়! শুধু ফুটবলাররা নন, নিয়তিও ফুটবল নিয়ে খেলে। তাই ফুটবল রোমান্টিক! নিষ্ঠুর এবং ট্র্যাজিক!

মেসি-মুলারদের মতো প্রথম ম্যাচেই নেইমার কি ট্র্যাজিক হিরো বনে যাবেন! ফুটবল ঈশ্বর উত্তরটা জমা রেখেছেন বৃহস্পতিবার রাতের জন্য।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Link copied!