• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম ধরবে কে?


মো. মির হোসেন সরকার
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম
অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম ধরবে কে?

পবিত্র রমজান মাসের এক মাসেরও কম সময় বাকি আছে। গণমাধ্যমে দেখলাম ইফতারের প্রধান অনুষঙ্গ খেজুর, ছোলার দাম বাড়তে শুরু করেছে। ভালো মানের খেজুরে কেজিপ্রতি ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যা আমার কাছে অস্বাভাবিক লেগেছে। তবে খুব বেশি অবাক হইনি। কারণ প্রতিবছর রমজান মাস এলেই অসাধু ব্যবসায়ী চক্র ওত পেতে বসে থাকে দাম বাড়ানোর জন্যই।

কয়েকদিন আগে বাজার করতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম কেজিখানেক খেজুর কিনে রাখবো। এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞেস করলাম সৌদি আরবের মেডজুল খেজুরের দাম কত? উত্তরে তিনি বললেন, ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। অথচ কিছুদিন আগেও একই খেজুর কেজিপ্রতি ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডলার সংকট, এলসি বন্ধ, আমদানি খরচ বৃদ্ধিসহ নানা বাণী শুনিয়ে দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীরা একটুও দ্বিধাবোধ করেন না। অথচ বর্তমান নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালানো কি যে কঠিন হয়ে পড়েছে আমাদের জন্য তা ব্যবসায়ীরা জানার পরও না জানার ভান করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ব্যবসায়ীদের নূন্যতম দায়িত্ববোধ বলতে কিছু নেই।

গত শুক্রবার গণমাধ্যমে একটি খবর নজরে এলো। নীরবে দুর্ভিক্ষ চলছে। প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু ছিলো, অধিকাংশ পরিবারে এখন আয়ের থেকে ব্যয় বেশি। আর বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারই ঋণগ্রস্ত। প্রতিবেদনের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করছি। চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার এখন সঞ্চয়পত্র ভেঙে খাচ্ছে। একদিকে যেমন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ, অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে জীবনযাত্রার মান ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিপরীতে খুব বেশি একটা সুফল যে এসেছে তা দৃশ্যমান নয়। বলা চলে বরাবরই সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। যা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অথচ অর্থনীতিবিদরা সবসময়ই সিন্ডিকেট রোধ করতে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

আমার প্রশ্ন হলো, একটি গণতন্ত্র রাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও কিভাবে ব্রেকডাউন করার সাহস রাখেন ব্যবসায়ীরা? তাদের ক্ষমতার উৎস কী? তাদের পেছনে ইন্ধনতাদা কারা? ব্যবসায়ীরা কি সরকারের চেয়েও ক্ষমতার অধিকারী বেশি?

হয়তোবা এসব প্রশ্নের সদুত্তর কখনোই মিলবে না। তাই আসন্ন রমজানের আগেই অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যেন স্বাভাবিক হয়, এমন প্রত্যাশা সরকারের কাছে।

লেখক : প্রতিবেদক, সংবাদ প্রকাশ

Link copied!