আজ ২০ নভেম্বর, বিশ্ব শিশু দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য “আ বেটার ফিউচার ফর এভরি চাইল্ড” অর্থাৎ প্রত্যেক শিশুর জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ। এই দিনে ইউনিসেফ শিশুদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো সমাধানে সমর্থন আদায় করে। শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ায় এবং প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে।
জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৫৯ সালের ‘শিশু অধিকার ঘোষণা’ ও ১৯৮৯ সালের ‘শিশু অধিকার কনভেনশন’ প্রণয়নের দিন অর্থাৎ ২০ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখে শিশু দিবস পালন করা হয়।
১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্বনেতারা শিশু অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়ন করেন। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে অনুমোদিত মানবাধিকার চুক্তি। শিশু অধিকার সনদের আলোকে শিশুদের জন্য এবং শিশুদের নিয়ে বিশ্বব্যাপী ইউনিসেফ বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস অনুযায়ী ১ জানুয়ারি ২০২১ দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ যার ৮.৩ শতাংশ ষাটোর্ধ্ব – সিনিয়র সিটিজেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হচ্ছে ১৮ বছরের নিচে যে কেউই শিশু। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি হচ্ছে শিশু তন্মধ্যে ১৫ শতাংশের বেশি হচ্ছে দরিদ্র শিশু।
কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে ১৫০ কোটি শিশু-কিশোরের উপর। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ স্কুল খুলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত পুরোটা সময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০লক্ষ শিশুর লেখাপড়া ব্যাহত হয়েছে। এই সময়ে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়াসহ সমগ্র এশিয়ার প্রায় ৮০ কোটি শিশুর লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ বলছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ৯১ শতাংশ শিশু ও তরুণ মানসিক চাপ ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। আমাদের শিশুরাও এ পরিস্থিতির বাইরে নয়। ইউনিসেফের এক গবেষণা বলছে, ২০২০ সালের মহামারির পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে কিশোরীদের বিয়ের হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
কোভিড দ্বিতীয় টেউ পরবর্তী বাস্তবতায় শিশু নির্যাতন, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, অপুষ্টি, শিশু অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ে যেমন নজর দেয়া জরুরি, তেমনি জরুরি সাংবিধানিক অঙ্গীকার অনুযায়ী সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে শিশুর সৃজনশীলতা, বিকাশ এবং আনন্দময় পরিবেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমুখী শিক্ষায় গড়ে তোলা।