• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

ডলারের দাম নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ কী?


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
ডলারের দাম নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ কী?
ডলারের বিনিময়। ছবি: সংগৃহীত

দেশে ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। চা‌হিদার তুলনায় সরবরাহ কমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের কারণে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ নিয়ে বুধবার (৮ মে) সার্কুলার জা‌রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, এখন থেকে ‘ক্রলিং পেগ’ নামে নতুন পদ্ধতিতে ডলার কেনা-বেচা হবে।

মূলত, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানিয়েছিলেন যে, এতদিন ডলারের দাম নির্দিষ্ট অঙ্কে বেঁধে দেয়া হলেও, এখন থেকে নির্দিষ্ট না রেখে একটি সীমারেখার মধ্যে উঠানামা করতে দেয়া হবে। যা মূলত ‘ক্রলিং পেগ পদ্ধতি’ নামে পরিচিত।

হার্ড ও সফট পেগ
সাধারণত ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়- হার্ড পেগ এবং সফট পেগ। হার্ড পেগ পদ্ধতিতে সরকার বৈদেশিক মুদ্রার মান নিজে ঠিক করে দেয়। সেই অনুযায়ী করা হয় লেনদেন।

অন্যদিকে, সফট পেগ পদ্ধতিতে বাজারের ওপরে মুদ্রার মান ছেড়ে দেয়া হয়। তবে সরকার বা ব্যাংক চাইলে সফট পেগ পদ্ধতিতে ডলারের একটি সম্ভাব্য দাম ধরে দিতে পারে।

এছাড়াও অনেক দেশে ডলারের মান সম্পূর্ণ বাজারমুখী রাখতে এবং হস্তক্ষেপবিহীন মান নির্ধারণে ‘ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট‍‍` ব্যবহার করা হয়। এতে বাজার ও অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডলারের দাম ওঠানামা করে।

কী এই ‘ক্রলিং পেগ’
হার্ড ও সফট পেগ এবং ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট পদ্ধতির অর্থনীতিতে নিজ দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন প্রকট আকার ধারণ করলে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার মান নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে ডলারের একটি সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দাম ধরে দেয়া হয়।

এতে ডলারের দাম একেবারে তলানিতে গিয়েও ঠেকবে না আবার আকাশচুম্বী আকারও ধারণ করবে না। মূলত অস্থিতিশীল মুদ্রাবাজারে সমতা আনতে আপদকালীন পদ্ধতি হিসেবে ‘ক্রলিং পেগ’ ব্যবহার করা হয়।

বাংলাদেশে ডলারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছর দুই ধরে ডলারের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। যে কারণে ৮০ টাকার ডলার গিয়ে ঠেকে ১১০ টাকায়। আবার ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দাম যখন ১১০ টাকা, তখন কার্ব বা খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১২০-১২৫ টাকায়।

ডলারের বাজারে এমন অস্থিরতা প্রশমন করতেই ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলার সংকটের মূল কারণ উদঘাটন না করে শুধু ক্রলিং পেগ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বাজারে ভারসাম্য আনা যাবে না।

Link copied!