• ঢাকা
  • শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৬

কারাগারে তামিল মুভি দেখছেন ভিআইপিরা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
কারাগারে তামিল মুভি দেখছেন ভিআইপিরা
কারাবন্দি ভিআইপিরা। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অবসান হয় তাদের প্রায় ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের। সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাপুটে অনেক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে।

সাধারণ বন্দিরা যেখানে জিমে যাচ্ছেন, গান-বাজনা ও আর্ট শিখছেন, মক্তবে কোরআন পড়ছেন, তখন নিরাপত্তাজনিত কারণ এসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভিআইপি বন্দিরা। যে কারণে অলস সময় কাটছে তাদের। বিকেলে সাধারণ বন্দিদের যখন লকআপে দেওয়া হয়, তখন বিশেষ অনুমতি নিয়ে ভিআইপি বন্দিরা হাঁটতে বের হন। তাদের রুমের দরজা রাত ৯টায় বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা হাঁটতে পারেন।

অবশ্য কারাগারে ডিভিশন পাওয়া ভিআইপিরা পাচ্ছেন বিশেষ সুবিধা। তাদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। তারা টিভিতে সিনেমা দেখার সুযোগ পান। কারণ, ডিভিশন থেকে শুরু করে হাসপাতাল, সেল, সাধারণ ওয়ার্ড সব জায়গায় এলইডি টিভিতে দিন-রাত চলে মুভি। পেনড্রাইভের মাধ্যমে এসব মুভি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যাচ্ছে।

কারা সূত্রমতে, কারাগারে বেশিরভাগ ভিআইপি বন্দির পছন্দের মুভি তামিল। পশ্চিমাসহ বিশ্বের বহু দেশে তামিল ছবির এখন কদর বেড়েছে। আগে বলিউড সিনেমার যেমন কদর ছিল সেই জায়গা অনেকটা দখল করেছে মৌলিক গল্প আর অসাধারণ দৃশ্যায়নের তামিল ছবি। তাছাড়া হলিউড সিনেমাও দেখেন অনেকে। পাশাপাশি তুরস্কভিত্তিক বেশ কিছু সিরিয়ালও দেখেন অনেকে।

সূত্রমতে, ডিভিশন পাওয়া ভিআইপি বন্দিরা যেসব কক্ষে থাকেন সেগুলোর আয়তন ১০ থেকে ১২ ফুট। এসব কক্ষে খাট, চেয়ার, টেবিল ও টেলিভিশন রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে অ্যাটাচড ওয়াশরুম। বিশেষ বন্দিদের জন্য আলাদা রান্না হয়। সকালের নাশতার জন্য রুটি, ডাল, সবজি ও জেলি বরাদ্দ থাকে। এ ছাড়া দুপুর ও রাতের মেন্যুতে থাকে ভাত, মাছ, মাংস ও ডাল।

কারা কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং পুলিশ ও আমলারা। যাদের সংখ্যা এখন ৬৫ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

কারাগারে ভিআইপিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র, সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

আরও রয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, পুলিশের সাবেক দুই আইজি এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, এডিসি আব্দুল্লাহিল কাফি, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল প্রমুখ।

অবশ্য এসব ভিআইপি বন্দিদের কক্ষগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তবে বিশেষ বন্দিরা ১৫ দিন পর এক দিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ও সপ্তাহে এক দিন মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন।

Link copied!