• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ক্ষমতা যতই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয় : প্রধান উপদেষ্টা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম
ক্ষমতা যতই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয় : প্রধান উপদেষ্টা
ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আজ বাংলাদেশের আদালত এমন এক স্পষ্টতার সঙ্গে রায় দিয়েছে, যা দেশজুড়ে এবং দেশের সীমানা পেরিয়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই দণ্ড ও সাজা একটি মৌলিক নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ক্ষমতা যাই হোক না কেন, কারো অবস্থান আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এই রায় জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের জন্য এবং যেসব পরিবার এখনো তাদের প্রিয়জনের শোক বয়ে বেড়াচ্ছে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
 
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

ড. ইউনূস বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের দ্বারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের মুহূর্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। তরুণ এবং শিশুদের বিরুদ্ধে তাদের অপরাধ ছিল প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের আদেশ, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর—আমাদের আইন এবং সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে মৌলিক বন্ধন উভয়ই লঙ্ঘন করেছে। এসব কাজ বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক মূল্যবোধ-মর্যাদা, স্থিতিশীলতা ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকারকে গভীরভাবে আঘাত করেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রায় এক হাজার ৪০০ জন মানুষের জীবন নিভে গেছে। তারা কোনো সংখ্যা নয়, তারা ছিল ছাত্র, বাবা-মা, অধিকারপ্রাপ্ত নাগরিক। মাসব্যাপী সাক্ষ্যে উঠে এসেছে কিভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও চালানো হয়েছিল, তা বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। এই রায় তাদের কষ্টকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে আমাদের বিচারব্যবস্থা অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনবে।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন জবাবদিহির বৈশ্বিক স্রোতে আবার যোগ দিচ্ছে। শিক্ষার্থী এবং নাগরিকরা যারা পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তারা এটি বুঝতে পেরেছিল এবং অনেকে তাদের জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছিল। আমাদের আগামীকালের জন্য তাদের আজকের দিনটি উৎসর্গ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সামনের পথের জন্য কেবল আইনি জবাবদিহি নয়, প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্নির্মাণ করা দরকার। মানুষ কেন সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বের জন্য সব কিছুতে ঝুঁকি নেয়—তা বোঝা এবং সেই বিশ্বাসের যোগ্য সিস্টেম তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রাপথেরই একটি পদক্ষেপ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে মোকাবেলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনাকে মূল্য দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার শুধু টিকে থাকবে না—এদেশে তা প্রতিষ্ঠিত হবে, বিকশিত হবে এবং টিকে থাকবে।

Link copied!