ভারতের সেনাবাহিনী ভবিষ্যতের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুর ছিল শুধু একটি ট্রেলার, যা ৮৮ ঘণ্টায় শেষ হয়েছে। পাকিস্তান আবার সুযোগ দিলে আমরা তাকে শিখিয়ে দেব, কীভাবে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হয়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে ‘চাণক্য ডিফেন্স ডায়ালগস’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি অপারেশন সিঁদুরের উল্লেখ করে জানান, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও সক্ষমতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘যথাযথ জবাব’ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, অপারেশন থেকে তিনটি বড় শিক্ষা পাওয়া গেছে-
বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয়, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা ও কমান্ড চেইনের প্রতিটি স্তরে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
তার ভাষায়, অপারেশন হলে আমরা সেখান থেকে শিখি। এবারও কিছু শিক্ষা পেয়েছি। বিশেষ করে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব টের পেয়েছি।
তিনি বলেন, আজকের যুদ্ধ বহুমাত্রিক। তাই শুধু সেনাবাহিনী নয়, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিএপিএফ- সব বাহিনীর সুসংহত সমন্বয় প্রয়োজন। এখন আর কেবল সেনাবাহিনী আলাদাভাবে যুদ্ধ করতে পারে না,সবাইকে একসঙ্গে লড়তে হয়।
দীর্ঘ যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়েও সতর্ক করেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। এবার লড়েছি ৮৮ ঘণ্টা, পরের বার হয়তো চার মাস বা চার বছরও লাগতে পারে। তাই খাদ্য, গোলাবারুদ ও অস্ত্রের যথেষ্ট মজুত আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
পহেলগাম হামলার পর ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ভারতের অগ্রগতিতে কেউ বাধা দিলে দেশটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ ভারতের জন্য বড় উদ্বেগ। আমরা বহুদিন ধরে বলছি, আলোচনা ও সন্ত্রাসবাদ একসঙ্গে চলতে পারে না। শান্তিপূর্ণ পথ নিলে ভারত সহযোগিতা করবে, অন্যথায় সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের একইভাবে মোকাবিলা করা হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল হওয়ার পর অঞ্চলটিতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির বড় ধরনের উন্নতি হয়েছে ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
‘চাণক্য ডিফেন্স ডায়ালগস’ ভারতীয় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার। সেখানে নীতিনির্ধারক, কৌশল বিশেষজ্ঞ, সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ভারতের কৌশলগত পথনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেন।






































