পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থানে ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ৮টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৮টি হাট বসবে। হাটগুলোতে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য শর্তাবলি মানা সাপেক্ষে এসব পশুরহাট ইজারাপ্রাপ্তদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএসসিসি ও ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে দরপত্র বিক্রি। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইজারা চূড়ান্ত হতে পারে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৯ জুন দেশে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। এসব অস্থায়ী হাটের ইজারার মেয়াদকাল হবে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচ দিন। হাটে পশু বিক্রির পাশাপাশি গত বছরের মতো এবারও ডিজিটাল হাটকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসিতে যেসব স্থানে হাট বসবে
গত ২ মে আটটি পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করেন ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম। এই দরপত্র অনুযায়ী এক কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৬৭ টাকায় ভাটারা (সাঈদ নগর) সংলগ্ন খালি জায়গা, এক কোটি ২০ লাখ টাকায় উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন বউ বাজার এলাকা, এক কোটি ৫১ লাখ ৬ হাজার ৬০ টাকায় বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাব নগর ব্লক বি থেকে এইচ পর্যন্ত খালি জায়গা, এক কোটি ৩৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকায় মিরপুর সেকশন-৬ এর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা, ২৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় মোহাম্মদপুরের বছিলা, ৬০ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কাওলা শিয়ালডাঙ্কা সংলগ্ন খালি জায়গা ও পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৬০ টাকায় ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাচকুড়া বেপারীপাড়ার রহমান নগর আবাসিক প্রকল্প এলাকায় পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়।
ডিএসসিসির যেসব স্থানে হাট বসবে
গত ২৭ এপ্রিল সাতটি পশুর হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। এর মধ্যে সরকারি মূল্যে দুই কোটি ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬৯২ টাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, এক কোটি ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯২২ টাকায় পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, এক কোটি ৭২ লাখ ৯ হাজার ১০০ টাকায় মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা, দুই কোটি ৯৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন খালি জায়গা, তিন কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার ২৭৮ টাকায় যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ সংলগ্ন খালি জায়গা, দুই কোটি ৪৮ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকায় ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা, ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৬০০ টাকায় লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গায় দরপত্র আহ্বান করা হয়।
ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “যানজট বিবেচনায় মেয়রের নির্দেশে প্রতি বছর হাটের সংখ্যা কমানো হচ্ছে। এই আটটি হাটের বাইরে ডিএসসিসির স্থায়ী পশুর হাট সারুলিয়ায় কোরবানির পশু বিক্রি হবে। সবগুলো হাটে যাতে সুষ্ঠুভাবে পশু বেচাকেনা করা যায়, এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএসসিসি।”
পশুর হাটের সার্বিক বিষয় নিয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ঈদুল আজহায় পশুর হাট ইজারা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ অন্য অনেক কাজ থাকে। এ কাজের জন্য অন্তত দুই-তিন মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। সে অনুযায়ী ডিএনসিসি আটটি অস্থায়ী পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করেছে। গাবতলীর স্থায়ী হাটেও কোরবানির পশু বিক্রি করা হবে। নগরে যাতে পশু কোরবানি এবং বর্জ্য অপসারণ সঠিক ব্যবস্থাপনায় হয়, তার সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
সেলিম রেজা আরও বলেন, “হাটে আসা পশু অনলাইনে প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হবে। হাটগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাটগুলোর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকতে হবে।”
আপনার মতামত লিখুন :