• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আমার স্বামীই এডিসি হারুন স্যারকে আগে মারধর করেন : সানজিদা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩, ০৭:৪৫ পিএম
আমার স্বামীই এডিসি হারুন স্যারকে আগে মারধর করেন : সানজিদা

পুলিশের বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে নির্যাতন এবং রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের মধ্যকার ঘটনার সূত্রপাত যাকে কেন্দ্র করে, সেই সানজিদা আফরিন অবশেষে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, “আমার স্বামীই এডিসি হারুন স্যারকে প্রথমে আঘাত করেছেন।”

সানজিদা রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তা। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সানজিদা।

সেদিনের ঘটনা নিয়ে সানজিদা আফরিন বেসরকারি একটি টেলিভিশনে কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি বেশ কয়েকদিন ধরে সিভিয়ার পেইনে (মারাত্মক ব্যথা) ভুগছিলাম। সেদিন পেইনটা একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছিল। তাই তখন আমার একজন ডাক্তার দরকার ছিল। যেহেতু ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল স্যারের (এডিসি হারুন) জুরিসডিকশনের (আওতা) মধ্যে পড়ে তাই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমি স্যারের হেল্প চেয়েছিলাম। স্যারকে জানালে তিনি আমাকে বলেছিলেন, ঠিক আছে আমি আশপাশে আছি। আমি এসে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দিচ্ছি। এরপর স্যার (এডিসি হারুন) এলেন। আসার পর একটা ডাক্তার ম্যানেজ হলো। এরপর ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন। আমি ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিলাম। ইকো টেস্ট আর ইসিজি করানো হলো।”

সানজিদা আরও বলেন, “যে রুমে ইটিটি করানো হয় আমার ঘটনার সময় সেই রুমে ছিলাম। ইটিটি করানোর ১৫-২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা হট্টগোলের শব্দ শুনি। শুনতে পাই স্যার (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন- ‘ভাই আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না।’ আমার প্রথমে ধারণা হয়েছিল যে হয়তো অন্য কারও সঙ্গে ঝামেলা। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর আমি দেখতে পাই আমার হাজবেন্ড (আজিজুল হক মামুন), উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন, কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত অবস্থায় ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি তাদের চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।”

“ওই সময় হারুন স্যার নিজের সেফটির (নিরাপত্তার) জন্য আমি যেখানে দাঁড়ানো ছিলাম সেই রুমের দিকে দৌড়ে এসে দাঁড়ালেন। ইটিটি রুমে এতলোক ঢোকাতে তখন সেখানে একটা অকওয়ার্ড সিচুয়েশন (বিব্রতকর পরিস্থিতি) তৈরি হয়। কারণ ইটিটি রুমে রেস্ট্রিকশন থাকে। তখন আমি শাউট করছিলাম। কারণ এই রুমে কোনো ছেলে ঢোকার কথা না।”

সানজিদা বলেন, “এরপর আমার হাজবেন্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, এই ভিডিও কর। এরপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে তখন আমি আমার হাজবেন্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করছিলাম। এরপর যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমার হাতেও সামান্য ব্যথা পাই। কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর আমার হাজবেন্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।”

“সেই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড (এপিএস আজিজুল হক) আমার গায়ে হাত তোলেন এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করছিলেন। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও এলেন। এর ১০-১৫ মিনিট পর ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।”

এসব ঘটনার স্থান কোথায় এবং কয়টার দিকে হয়েছে জানতে চাইলে সানজিদা আফরিন বলেন, “আমার ডাক্তার দেখানোর সিরিয়াল ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এরপর ৭টার দিকে স্যার (হারুন) এসেছিলেন, পরে ডাক্তারও আসেন। এরপর আমি ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকি। ঘটনা ঘটেছে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের চারতলার কার্ডিওলজি বিভাগে।”

আপনার অসুস্থের বিষয়ে আপনার স্বামী (আজিজুল হক মামুন) জানতেন কি না, জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, “আমি অসুস্থ এটা আমার হাজবেন্ড জানতেন। কিন্তু আমি যে সেদিনই ডাক্তার দেখাতে যাবো তা তিনি জানতেন না। এর আগেও বিভিন্ন সময় ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু কোনো করণে তা তিনি মিস করে গিয়েছিলেন। অথবা বিজি ছিলেন। যেহেতু ৬-৭ দিন ধরে আমার সিভিয়ার টেস্ট পেইন হচ্ছিল...। যাইহোক, সবসময় তো পরিস্থিতি সেরকম থাকে না যে আমি তার সঙ্গে শেয়ার করব। যেহেতু আমার সিভিয়ার পেইন হচ্ছিল তাই আমি নিজেই ডাক্তারের কাছে গেছি।”

Link copied!