বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “আমরা প্রত্যাশা করি নাই পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির উপর হামলা করার সাহস পাবে।”
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালের সামনে জাতীয়তবাদী যুবদলের এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কেনো হামলা হলো? এই কেনো জবাব হলো- যারা নতুন রাজনৈতিক দল সংগঠিত করেছে, যাদের এখনো নিবন্ধন নাই, তারা অনেক আবেগ তাড়িত হয়ে অপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে। সেইসব রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে আজ দেশের মানুষ অবলোকন করলো গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির উপর ফ্যাসিস্ট শক্তি হামলে পড়লো। সুতরাং বাবারা- রাজনৈতিক ময়দানে আরও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার জন্য আমরা পরামর্শ সব সময় দিয়েছি, আজও দিচ্ছি। আমরা তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভবিষ্যৎ তোমরা অনেক অবদান রাখবে।”
তিনি বলেন, “আমরা জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম ডেমোক্রেসির জন্য। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি সারা দেশে মবক্রেসির রাজত্ব হচ্ছে। চেয়েছিলাম ডেমোক্রেসি। হয়ে যাচ্ছে মবক্রেসি। কিন্তু কেনো? যারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস পাচ্ছে তারা কারা। এই দুই কেনো কারণ হচ্ছে সরকারের নির্লিপ্ততা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা।”
তিনি বলেন, “৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পরে থেকে সহযোগিতা করেছি কিন্তু আজ গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে ইস্যু সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই ইস্যুর মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী দল বিএনপিকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম লন্ডন বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দিবেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, প্রস্তুতি নিতে বলছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজনের জন্য যথাযথ নির্দেশনা দেন নাই। আশা করবো, এই জাতিকে আশ্বস্ত করবেন, জনগণকে আশ্বস্ত করবেন। আশা করি দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনকে সেই বার্তা দেবে।”
বিএনপির সরকারে সহযোগিতা করতে চায় জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “মানুষ বুঝতে পারে যে সরকার আমাদের সহযোগিতা নিতে চায়। সু-পরিকল্পিতভাবে যারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায় তারা যেন সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়। জনগণের মনে যেন এমন কোনো প্রশ্ন না আসে যে সরকার কোনো নিদিষ্ট দলকে বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
এনসিপির কর্মসূচির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তাদের কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, যাতে বলতে পারে সরকার কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, এই সরকার নির্বাচন কীভাবে দেবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সিনিয়র সভাপতি রেজাউল করিম পল, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নয়ন ও যুবদলের সাবেক যোগাযোগ সম্পাদক নেতা গিয়াসউদ্দিন মামুন প্রমুখ।